মধ্যপ্রাচ্যের ৫ রুটে বিমানের ভাড়া কমানোর ঘোষণা দিলেও এর সুফল পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। বিমানের ভাড়া কমানোর আগেই টিকিট বিক্রি শেষ এমন খবর পাওয়া গেছে। ৪ জানুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান জানায়, বিমানের সুবর্ণজয়ন্তীতে মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীদের জন্য ভাড়া হ্রাস করা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, দুবাই ও আবুধাবি রুটে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে নতুন টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে হ্রাসকৃত ভাড়া কার্যকর হবে।
তবে এই ঘোষণার আগেই ইতিমধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বিমানের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে এই সময়ে যারা মধ্যপ্রাচ্যে যেতে চান তারা কোনও সুফল পাবেন না। জানাগেছে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গন্তব্যে কয়েকগুণ ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় প্রবাসী কর্মীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার পথ খুঁজছে কীভাবে ভাড়া কমানো যায়।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তৎপরতায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ভাড়া কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচটি গন্তব্যে ভাড়া কমানো হয়েছে বলে ঘোষণা দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
বিমান জানায়, ঢাকা-জেদ্দা রুটে ইকোনমি ক্লাসের প্রতিটি টিকিটের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া বর্তমানে ট্যাক্সসহ ৭২,৪৫৫ টাকা থেকে কমিয়ে ট্যাক্সসহ ৬৪,৮২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-রিয়াদ/দাম্মাম রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া বর্তমানে ট্যাক্সসহ ৭০,৭৫৮ টাকা থেকে কমিয়ে ট্যাক্সসহ ৬৩,১২৩ টাকা করা হয়েছে।
ঢাকা-দুবাই রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া বর্তমানে ট্যাক্সসহ ৭৫,৫০৮ টাকা থেকে কমিয়ে ট্যাক্সসহ ৬২,৭৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-আবুধাবি রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া বর্তমানে ট্যাক্সসহ ৬৭,০২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ট্যাক্সসহ ৫৮,৫৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি মনছুর আহমেদ কালাম বলেন, ‘আমরা তো বিমানের ভাড়া কমানোর এই ঘোষণা সংবাদে দেখেছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে— ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ফ্লাইট ক্লোজ, টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। জিডিএসে (গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম) তো বিমানের কম ভাড়ার কোনও কিছু দেখতে পাচ্ছি না। এটা মনে হচ্ছে, মুখে মুখে ঘোষণা।’
এদিকে বুধবার বিমানের প্রধান কার্যালয়ের সেলস সেন্টার, ফার্মগেট, মতিঝিল সেলস সেন্টারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে এই ৫ গন্তব্যের কোনও সিটই খালি নেই। অনেক আগেই এসব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বিমান প্রবাসী কর্মীদের জন্য কোনও সুবিধা দিতে পারেনি উল্লেখ করে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মী বিদেশে গেছে। এ সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার। নভেম্বর মাসে বিদেশে গেছে ১ লাখ ২ হাজার প্রবাসী শ্রমিক। এরমধ্যে ৭৪ শতাংশ গেছেন সৌদি আরবে। এই শ্রমিকদের বাড়তি ভাড়ায় টিকিট কাটতে হয়েছে।
শরিফুল হাসান বলেন, বিমান যে ভাড়া কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সেটিও যথাসময়ে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত হলো না। সব টিকিট তো আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। বিমানের উচিত ছিল ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে আনা। সিভিল এভিয়েশনও অন্য ক্যারিয়ারগুলোর সঙ্গে কথা বলে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post