ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ডে যাওয়ার পথে অন্তত ৩১ জন অভিবাসী মারা গেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার ফ্রান্সের উত্তর উপকূলে ঘটনাটি ঘটে। বুধবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, উত্তর ফ্রান্সের ক্যালাইস উপকূলে ইংলিশ চ্যানেলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৩১ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
ক্যালাইসের একটি হাসপাতালের বাইরে বক্তৃতায় দারমানিন বলেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন নারী ও একটি ছোট মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, দুইজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উভয়েই এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ম্যাক্রন বলেছেন, তার দেশ ইংলিশ চ্যানেলকে কবরস্থানে পরিণত হতে দেবে না। এদিকে, গত দুই দিনে ৪০০ জনেরও বেশি অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের কাছে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্প্যানিশ উদ্ধার কর্মীরা বলছেন, এসব অভিবাসন প্রত্যাশী ব্যক্তিরা বেশ কয়েকটি ছোট ও অনিরাপদ নৌকায় পশ্চিম আফ্রিকা থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন।
স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, উদ্ধার-কর্মীরা উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আসা ১৩০ জনেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে, যাদের মধ্যে বেশ কিছু নারী এবং ছোট শিশু রয়েছে। তাদের স্প্যানিশ দ্বীপপুঞ্জ গ্র্যান্ড ক্যানারিয়া এবং ফুয়ের্তে ভেনতুরাতে নিয়ে আসা হয়েছে।
এদিকে সাগরে দুর্দশাগ্রস্ত অভিবাসীদের জন্য মানবিক নেটওয়ার্ক হিসেবে পরিচিত ‘অ্যালার্ম ফোন’ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, সোমবার একটি পণ্যবাহী জাহাজ কিছু অভিবাসীকে সাগরে দেখতে পাওয়ার পর মরক্কোর রয়্যাল নেভিকে জানায়। এরপর উদ্ধারকারীরা সেখানে থাকা ২০ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেন। স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্পেনের উদ্ধার-কর্মীরা মরক্কোর কর্তৃপক্ষের বরাতে আরও জানিয়েছেন, অভিবাসীদের মধ্যে অন্তত একজন মারা গেছেন এবং অন্য একজন অভিবাসী নৌকা থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাগরে নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়া ২৪ জন অভিবাসী সাঁতরে মরক্কো উপকূলে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন।
মরক্কো, পশ্চিম সাহারা, মৌরিতানিয়া, সেনেগাল এবং গাম্বিয়ার মানব পাচারকারীরাই মূলত পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের আটলান্টিক রুটটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ এইভাবে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছেন।
আটলান্টিক রুটটি ইউরোপে আসতে অনিরাপদ অভিবাসনের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পথ হিসেবে বিবেচিত। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) এই রুটি ২০২১ সালে প্রায় ৯০০ অভিবাসীর মৃত্যু এবং নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়েছে। যদিও এটি নিশ্চিত যে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। কারণ সাগরে ডুবে যাওয়া অভিবাসীদের সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post