বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম আসরে উদ্বোধনী ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে ধসিয়ে দিলো ওমান। আজ খেলা শুরুর আগে অধিনায়ক জিশান মাকসুদ টসের সময় যেসব কথা বলেছিলেন, ম্যাচে যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল সেসব।
বোলারদের সম্মিলিত চেষ্টায় ওমান অল্প রানে পাপুয়া নিউ গিনিকে আটকে মঞ্চটা গড়ে রেখেছিল। এরপর ব্যাটাররা সে মঞ্চে স্রেফ ধসিয়ে দিলেন প্রতিপক্ষকে। সবকিছুর মিশেলে বিশ্বকাপের শুরুর ম্যাচে ১০ উইকেটের দাপুটে এক জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর সময় বলেছিলেন খটখটে শুকনো উইকেটে স্পিনারদের কাজে লাগাতে চান তিনি। সন্ধ্যার দিকের ব্যাটিং সহায়ক আবহাওয়ারও। অধিনায়কের রেসিপি অক্ষরে অক্ষরেই মেনেছে তার দল।
পাপুয়া নিউ গিনি ইনিংসের শুরুর ওভারেই উইকেট শিকার করল তার দল, পরের ওভারেও। তাতে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কাতেই পড়ে গিয়েছিল নবাগত দলটি। এরপর অধিনায়ক আসাদ ভালা আর ব্যাটার চার্লস আমিনির ৮১ রানের এক জুটিতে সে শঙ্কা বিদায় করে পাপুয়া নিউ গিনি। তবে ম্যাচে দলটির সুখস্মৃতি কেবল সে পর্যন্তই। আমিনি বিদায় নেন রান আউটের শিকার হয়ে, এর কিছু পর অধিনায়ক ভালাও পথ ধরেন আমিনির।
১০২ রানে ৪ উইকেট হারিয়েও একটা ক্ষীণ আশা ছিল পাপুয়া নিউ গিনির। তবে অধিনায়ক জিশানের দারুণ বোলিংয়ে সে আশাও শেষ হয়ে যায় দলটির। ওমান দলপতি একে একে তুলে নিলেন চার উইকেট। তাতে ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে কেবল ১২৯ রানই করতে পারে পাপুয়া নিউ গিনি।
আল আমেরাতের উইকেটে ১৬০ এর আশেপাশের সংগ্রহকে ধরা হচ্ছিল লড়াকু স্কোর। পাপুয়া নিউ গিনির সংগ্রহ যায়নি তার ধারে কাছেও। ওমানের জয়টা তাই খুব সম্ভবই হয়ে পড়েছিল প্রথম ইনিংসের পর। তবে ওমান যেভাবে ব্যাট করেছে, তাতে ১৬০ তুলেও লড়াই করতে পারত কিনা পাপুয়া নিউ গিনি, সেটা আলোচনাটাও পড়ে গেছে প্রশ্নের মুখে।
দুই ওপেনার আকিব ইলিয়াস আর জিতেন্দর সিং শুরু থেকেই চড়াও হয়েছেন পাপুয়া নিউ গিনি বোলারদের ওপর। তাতে কামব্যাকের ক্ষীণ আশাটাও শেষ হয়ে যায় পাপুয়া নিউ গিনির। ওভারপ্রতি দশের কাছাকাছি রান তুলে মাত্র ১৩.৪ ওভারেই ম্যাচটা শেষ করে ফেলেন দুজনে। ফলে ১০ উইকেটের দাপুটে জয় দিয়ে বিশ্বকাপটা দারুণভাবেই শুরু করে ওমান।
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। হুট করে স্বাগতিক হয়ে যাওয়া ওমানের জন্য তাই রোমাঞ্চটা একটু বেশি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা মাঠে নেমেছিল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচেই ইতিহাস গড়েছেন ওমান অধিনায়ক জিশান মাকসুদ।
এতদিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে সেরা বোলিং ফিগারটা ছিল নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরির। এবার তাতে যোগ হয়েছে জিশানের নামও। বিশ্বকাপের প্রথম আসরে ভারতের বিপক্ষে কেবল ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ভেট্টোরি।
ওই ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর, রবিন উথাপ্পা, ইরফান পাঠান ও হরভজন সিংয়ের উইকেট। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১০ রানের জয় পায় কিউইরা। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠে ভেট্টোরির হাতে।
আজ ১৪ বছর পর ওই রেকর্ডে ভাগ বসালেন জিশান। তিনি সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়েছেন সাসু বাবু, নরমান ভানুয়া, কিপলিন দরিগা ও ডেমিয়েন রাবুকে। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন জিশান। তবু প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা পাপুয়া নিউগিনিকে অলআউট করতে পারেনি ওমান। আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১২৯ রান করেছে তারা। পরে ওই লক্ষ্য অবশ্য কোনো উইকেট না হারিয়েই টপকে গেছে স্বাগতিকরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post