সাইক্লোন বুলেটিন-২
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওমানের মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সকল বিমান উঠানামা বন্ধ ঘোষণা! ওমান আবহাওয়া বুলেটিনের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী সাইক্লোন শাহিন বর্তমানে মাস্কাট থেকে ৪৫ কিমি দূরে অবস্থান করছে।
ইতিমধ্যেই দেশটির আল কুরুম অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। সেইসাথে মাতরাহ, আল খয়ের, বারকা সহ মাস্কাটের বেশ কিছু অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে হেলিকপ্টারের সাহায্যে মাস্কাটের বিভিন্ন অঞ্চলে টহল দিচ্ছে বিশেষ টিম। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরাসরি নজর রাখছেন দেশটির সুলতান হাইথাম বিন তারেক।
কিছুক্ষণ পূর্বে আল ওয়ালজার একটি পাহাড় ধ্বসে পড়েছে। আল কুরুম বাণিজ্যিক অঞ্চল পুরোপুরি এখন পানির নিচে। জরুরী উদ্ধারকারী টিম অত্র অঞ্চলের মানুষদের স্পীডবোডের সাহায্যে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। কুরুমের সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বৈদ্যুতিক লাইনও বন্ধ করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় অত্র অঞ্চলে বসবাসরত সকল নাগরিক ও প্রবাসীদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।
ওমান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় শাহিন উত্তর আল বাতিনা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। সিএএ জানিয়েছে, “ন্যাশনাল মাল্টি হ্যাজার্ডস আর্লি ওয়ার্নিং সেন্টারের সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট বিশ্লেষণ অনুযায়ী জানা যাচ্ছে যে, ঘূর্ণিঝড়টি ৪৫ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে।
আজ রোববার ওমানের স্থানীয় সময় ৪টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড়ের ওমান উপকূলে আঘাত হানবে। এই ঝড়ের প্রভাবে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণ আল বাতিনাহ,মাস্কাট এলাকায় ২০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও দাহিরা, আল বুড়াইমি, আল দাখিলিয়া এবং দক্ষিণ আশ শারকিয়াহ প্রদেশের উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় শাহীনের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা এরই মধ্যে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। দেশটির সিভিল ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যাম্বুলেন্স অথরিটি (সিডিএএ) জানিয়েছে, “ঝড়ের কারণে প্লাবিত এলাকায় ৫০ জনের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনে আটকে পড়া ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরই মধ্যে মাস্কাট প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ও মাতরাহ প্রদেশের প্রায় ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।”
ওমানের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, “বর্তমানে, মাস্কাট, দক্ষিণ আল বাতিনাহ, আল দাখিলিয়া প্রদেশের কিছু অংশ এবং উত্তর আল বাতিনা প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। মাতরাহ এলাকার আল জাহিয়া অঞ্চলে পানির স্তর বেড়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় শাহীনের কারণে মাস্কাট প্রদেশের দুটি এলাকায় হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। ওয়ালজা ও আল খয়ের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জাতীয় জরুরী ব্যবস্থাপনা কমিটি (এনসিইএম) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এনসিইএম জানিয়েছে, “জলাবদ্ধতার কারণে বুর্জ আল সাহওয়া গোল চক্কর থেকে সীব এলাকায় যাওয়ার রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সকল জনগণকে উপকূলীয় রাস্তায় চলাচলে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে ওমানের দাতব্য সংস্থা। ওমানের রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সহযোগিতায় আশ্রয় কেন্দ্রে জরুরি ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের জন্য বেশ কয়েকটি ট্রাকে করে খাদ্য দ্রব্য বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post