বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাওয়া কমছে। ২০২৩ সালের চেয়ে অন্তত ৩ লাখ কর্মী কম গেছে ২০২৪-এ। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রতারিত হয়ে কর্মীর সংখ্যাও। এক বছরে এই অভিযোগ প্রায় ৫ হাজার।
ধামরাইয়ের বাসিন্দা আব্দুস সালাম, ৬ মাস আগে ব্রুনাই থেকে প্রতারিত হয়ে ফেরত এসেছেন। একই মানুষ আবার যাবেন বিদেশ মন স্থির করেছেন। অথচ তার নেই কোনো কাজের দক্ষতা। প্রথমবার সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এবার করবেন ৮ লাখ টাকা। যেতে চান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে।
আব্দুস সালাম বলেন, দেশে তো চলা যায় না। অল্প টাকায় কাজ করে, দিনমজুরি করে চলা খুব কষ্ট। বিদেশ না যাওয়া ছাড়া আমাদের মত মানুষদের খুব সমস্যা। তাই বিদেশ না যেয়ে উপায় নেই।
সালামের মতো প্রায় সবার অভিজ্ঞতাই একই রকম। তারপরও ভাগ্য বদলাতে যেতে চান বিদেশ।
বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান, দেশে চাকরি করলে বিদেশের মত বেতন তারা পাবেন না। এ জন্য বিদেশ চলে যাওয়াই ভালো মনে করেন তারা।
কয়েক বছর ধরে একেএকে বন্ধ হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বৈধ শ্রমবাজার। এর ফলে বেড়েছে ব্যয়, বাড়ছে প্রতারণাও। এরমাধ্যেই গত বছর ৯ লাখ ৬৩ হাজার বাংলাদেশি কর্মী গেছেন দেশের বাইরে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশই গেছে সৌদি আরবে। এই সংখ্যা ২০২৩ সালে ছিল ১৩ লাখ।
বিদেশ গেলেই সব হবে, এমন স্বপ্ন গুড়ি বালি হয় কতো মানুষের। তা সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে সরকারি হিসাব বলছে, গত বছর ৫ হাজার বিদেশ ফেরত কর্মী অভিযোগ জানিয়েছেন বিএমইটিতে। প্রতারণার সুরাহা চেয়ে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৫৩টি।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ বলছেন, প্রবাসী কিংবা বিদেশগামীদের কথা শুধু মুখেই বলেন রাষ্ট্রের কর্তারা।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়টা যতটা গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত সেটি কিন্তু কখনই হচ্ছে না। প্রত্যেকেই এই অভিবাসী কর্মীদের এক্সপ্লয়েট করে রাষ্ট্র বা এজেন্সি সব জায়গার থেকেই তারা উপকৃত হচ্ছে।
২০২৪ সালে প্রথম ৭ মাসে দেশে ফিরেছেন ৪০ হাজার কর্মী। অন্যদিকে বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় গিয়ে কাজ না পেয়ে দেশে ফিরতে নিবন্ধন করেছেন ৩১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post