কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের সামনে ভারতীয় নাগরিকদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশি ভিসার জন্য আবেদন করতে। তবে ভিসা প্রক্রিয়ায় এখন নতুন নিয়ম ও সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় প্রতিদিন মাত্র ১০০টি আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে এবং অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ জনকে। শেখ হাসিনার আমলে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০টি ভিসা ইস্যু করা হলেও বর্তমানে সেই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
গত জুলাইয়ে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত ও তার ভারত-নির্বাসনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ক্রমাগত উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ৫ আগস্টের ঘটনার পর ভারতে বাংলাদেশের মিশনগুলোর বিরুদ্ধে সহিংসতা আরও জটিলতা তৈরি করেছে। কলকাতা ও ত্রিপুরা মিশনে সহিংস বিক্ষোভ এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনায় বাংলাদেশ মিশন প্রধানদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। এমনকি নিরাপত্তার কারণে ত্রিপুরায় বাংলাদেশের মিশন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা মিশনে কর্মরত এক পদস্থ কূটনীতিক জানান, ৫ আগস্টের আগে ভিসা প্রক্রিয়া ছিল সহজতর এবং প্রতিদিন গড়ে ৩৫০টি ভিসা ইস্যু করা হতো। তবে এখন প্রতিটি ভিসা আবেদনপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয়। প্রতিদিন ভিসা ইস্যুর সংখ্যা ২০০ থেকে কমে মাত্র ১০০টি আবেদনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ভিসা দেওয়ার হারও ৭৫-৮৫ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতেও ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার আগ্রহ ব্যাপক। তাদের অনেকে বাংলাদেশে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে বা অন্যান্য ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আসতে চাইছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিগত সরকারের সময়ে অনেক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ভিসা পেতেন, যা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান নিয়মে ভিসা প্রক্রিয়া কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশি ভিসার প্রতি ভারতীয় নাগরিকদের চাহিদা প্রমাণ করে দুই দেশের জনগণের মাঝে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের গুরুত্ব। তবে ভিসা প্রক্রিয়ায় আরোপিত সীমাবদ্ধতা এবং নিরাপত্তার কড়াকড়ি নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি করেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post