ভারতের লখনৌর একটি হোটেলে নিজের মা ও চার বোনকে হত্যা করেছেন আরশাদ নামের এক যুবক। হত্যার পর এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশী ও মাফিয়াদের অত্যাচারের কারণে এ নৃশংস সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় আরশাদ দাবি করেন, তাদের প্রতিবেশী ও মাফিয়ারা তাদের পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে এবং বাংলাদেশি বলে অপবাদ দিয়েছে। ১৫ দিন ধরে তারা রাস্তায় ঠান্ডায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। আরশাদের অভিযোগ, মাফিয়ারা তাদের বাড়ি দখল করেছে এবং তার ও তার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তার বোনদের বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিল।
তিনি বলেন,”প্রতিবেশীদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে আমাদের পরিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আমার মা ও বোনদের শ্বাসরোধ করে এবং কব্জি কেটে হত্যা করেছি। এর জন্য প্রতিবেশীরা দায়ী। আমাদের বাড়ির দলিল আমাদের কাছেই আছে, কিন্তু তারা জোর করে বাড়ি দখল করেছে।”
আরশাদ ভিডিওতে একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাদের ভূমিদস্যু ও নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তোলেন। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের মদদ রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
“রনু, আফতাব, আলিম খান, সেলিম, আরিফ, আহমেদ ও আজহার— এরা সবাই আমাদের বাড়ি দখলের ষড়যন্ত্র করেছে। তারা আমার বোনদের বিক্রি করার পরিকল্পনা করছিল।”
ভিডিও বার্তায় আরশাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন,”আমরা বেঁচে থাকতে বিচার পাইনি। কিন্তু মৃত্যুর পর যেন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। তারা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায়।”
তিনি আরও অনুরোধ করেন, তাদের বাড়িটি যেন একটি মন্দিরে পরিণত করা হয় এবং বাড়ির জিনিসপত্র এতিমখানায় দান করা হয়।
হত্যার পর আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিলেও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরশাদকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে তার বাবাও জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছেন আরশাদ।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ভারতের পারিবারিক নির্যাতন ও সামাজিক সহিংসতার বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আরশাদ যে অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখন দেখার বিষয়, অভিযুক্ত প্রতিবেশী ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post