জিম্বাবুয়ে সরকার মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলুপ্ত করেছে, যা দেশটির আইনে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গতকাল (৩১ ডিসেম্বর), প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া এই নতুন আইন অনুমোদন করেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির পক্ষে ভোট দেওয়ার পর এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে, “এটি এ অঞ্চলের জন্য একটি আশার আলোকস্তম্ভ।” তবে জরুরি অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহালের বিধান রাখায় অ্যামনেস্টি কিছু সমালোচনা করেছে।
জিম্বাবুয়েতে সর্বশেষ ২০০৫ সালে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। এরপর থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হলেও আদালত এই শাস্তি দিয়ে আসছিল। অ্যামনেস্টির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৬০ জন বন্দীর মাথার ওপর মৃত্যুদণ্ড ঝুলছিল। নতুন আইনের মাধ্যমে তাদের পুনরায় দণ্ড নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে, যেখানে অপরাধের প্রেক্ষিতে বিচারকেরা নতুন শাস্তি আরোপ করবেন।
প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া নিজেও মৃত্যুদণ্ডের শিকার হতে হতে বেঁচে যান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, একটি ট্রেন বোমা হামলার ঘটনায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে তার শাস্তি কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়। এই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই তাকে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে উৎসাহিত করেছে।
অ্যামনেস্টির মতে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১১৩টি দেশ মৃত্যুদণ্ড পুরোপুরি বিলুপ্ত করেছে। তবে ২০২৩ সালে চীন, ইরান, সৌদি আরব, সোমালিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি।
জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে চালু হয়। নতুন এই সিদ্ধান্ত দেশটিকে আরও মানবিক এবং উন্নত শাসনব্যবস্থার পথে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post