ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ফলে বাংলাদেশকে বিপুল মূল্য চোকাতে হতে পারে এবং সংকটে পড়লে পাকিস্তানও তাদের সাহায্য করবে না বলে ভারতের ইন্ডিয়া ডট কম মিডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ ভারত বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছে। তবে, এই অবস্থান বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হতে পারে, কারণ দেশটি বেশ কিছু মৌলিক পণ্যের জন্য ভারতীয় বাজারের ওপর নির্ভরশীল।
ভারত বাংলাদেশকে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশ ভারত থেকে চাল, গম, পেঁয়াজ, রসুন, চিনি, তুলা, সিরিয়াল, পেট্রোলিয়াম, ইলেকট্রনিক্স, প্লাস্টিক ও স্টিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১৬ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার ছিল, যা বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হল এর টেক্সটাইল শিল্প, যা দেশের মোট জিডিপির ১১ শতাংশ অবদান রাখে। তবে এই শিল্প ভারতের তুলা আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা ভারতের উৎপাদিত তুলার ৩৫ শতাংশ বাংলাদেশের বাজারে চলে আসে। যদি এই আমদানি বন্ধ হয়ে যায়, তবে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প ভেঙে পড়বে, যা দেশের জিডিপি কমাতে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে এবং ব্যাপক বেকারত্ব সৃষ্টি করতে পারে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ২ লাখ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬.৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৪,৩৬৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছাড়াও, গত ৮ বছরে ভারত বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছে। তবে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ এখন তার টেক্সটাইল শিল্পে বিপর্যয়ের মুখে। অনেক কোম্পানি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে।
ভারত অভিযোগ করছে, মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার চরমপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীসমূহের অপরাধ উপেক্ষা করছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো অবনতি ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশের ভারত-বিরোধী অবস্থান দেশটির অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post