দেশের শোবিজ অঙ্গনের কয়েকজন জনপ্রিয় নাট্যশিল্পী ও মডেলের বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ততার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাফা কবির, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া, তানজিন তিশা, এবং সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (নারকোটিক্স) তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নারকোটিক্সের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র অরিন্দম রায় দীপের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। দীপ একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন, যা ব্যবহার করে মাদক কেনাবেচা চলত। তার মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ে উল্লেখিত অভিনেত্রীদের মাদক অর্ডারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
নারকোটিক্স জানায়, দীপের ফোনে সাফা কবির, টয়া এবং সুনিধি নায়েকের সরাসরি মাদক অর্ডার দেওয়ার চ্যাটিং রেকর্ড পাওয়া গেছে। একটি চ্যাটে সাফা কবির ‘ই’ বা এমডিএমএ অর্ডার করেন, আরেকটিতে টয়া কক্সবাজারের একটি প্রাইভেট পার্টির জন্য মাদক চেয়েছেন। তানজিন তিশা এবং সুনিধি নায়েকেরও মাদক সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।
ভারতীয় নাগরিক সুনিধি নায়েক, যিনি সংগীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণবের প্রাক্তন স্ত্রী, দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত বলে জানা গেছে। তার অর্ডার করা মাদকের ধরন ও পরিমাণও তদন্তকারীদের নজরে এসেছে।
নারকোটিক্সের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন জানান, দীপকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট এবং চ্যাটিং থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং থাইল্যান্ড থেকে চোরাইপথে এসব মাদক দেশে আসছে। এরপর স্ন্যাপচ্যাট, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্মে সাংকেতিক ভাষায় মাদক কেনাবেচা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, এমডিএমএ বা ‘ই’ অত্যন্ত শক্তিশালী উত্তেজক মাদক, যা মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি করতে পারে। এটি সময়ের অনুভূতি এবং বাস্তব জ্ঞানকে বিকৃত করে দেয়।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া বলেন, তিনি দীপ নামের কাউকে চেনেন না এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে সাফা কবির ও তানজিন তিশার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো বক্তব্য দেননি।
নারকোটিক্স জানায়, অভিযুক্তদের কেউ কেউ চ্যাটিং রেকর্ড মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন। তবে, দীপ গ্রেপ্তারের সময়ই তার ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।
শোবিজ অঙ্গনে মাদকের এই সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post