মহামারী করোনাভাইরাসের টিকা না থাকায় প্রবাসী কর্মীদের বিদেশে গিয়ে কোয়ারেন্টিনের জন্য বাড়তি টানা গুনতে হচ্ছে। এর প্রভাবে বিদেশে কর্মী পাঠানো কমে যাচ্ছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদেশগামী কর্মীদের টিকার ব্যবস্থা করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭-জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপনে বিদেশগামী কর্মীদের টিকা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চীন সরকারের উপহারের ১১ লাখ টিকা দেওয়া শুরু হবে ১৯ জুন। দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি জেনারেল হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল বা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। টিকা প্রদানের জন্য ১০ ক্যাটাগরির নাগরিকদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এতে ৩ নম্বরে বিদেশগামী কর্মীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ইসলামিক কুইজে অংশগ্রহণ করে জিতে নিন নগদ অর্থ পুরষ্কার!
বিদেশগামী কর্মীরা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিবন্ধন সনদ নিয়ে টিকা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বিদেশগামী কর্মীদের সহজে টিকা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এর ফলে অগ্রাধিকার সুবিধা পাচ্ছেন বিদেশগামী কর্মীরা।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানসচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, সরকারি প্ল্যাটফর্ম ‘সুরক্ষা’ থেকে টিকা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন বিদেশগামী কর্মীরা। কম সময়ে এবং সহজে অভিবাসী কর্মীদের টিকা প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
এদিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদেশগামী কর্মীদের করোনা টিকা দেওয়া নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। মূলত চীনের সিনোফার্মের টিকা মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশেই অনুমোদিত নয়। যেমন দেশের বড় শ্রম বাজার সৌদি আরবে এখনও সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দেয়নি। একইসাথে ওমান, কাতার ও কুয়েতও এই টিকা অনুমোদন এখনও দেয়নি।
বাংলাদেশের শ্রম বাজারের মধ্যে বাহরাইন, ইরান, ইরাক, জর্ডান, লেবানন, মালদ্বীপে সিনোফার্মের টিকা অনুমোদন পেয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সিনোফার্মের টিকা অনুমোদন দিয়েছে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি প্রবাসীদের উপকার করতেই চায়, তাহলে সহজ সমাধান হচ্ছে জনসনের (Johnson & Johnson’s Janssen) টিকা দেওয়া। ১ ডোজ টিকা, ২য় ডোজের কোন ঝামেলা নেই। জনসনের টিকা প্রতি ডোজ প্রায় ১০ ডলার মানে ৮৫০ টাকা প্রায়। সৌদি প্রবাসী একজনের ২৫ হাজার টাকা ভর্তুকির বিপরীতে সরকার ৩০ জনকে এই টিকা দিতে পারবে।
কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, অধিকাংশ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষের দিকে, এমতাবস্থায় দুই ডোজ টিকা নেওয়ার মতো সেই সময় অনেক প্রবাসীর ক্ষেত্রেই সম্ভব হবেনা। সুতরাং এমতাবস্থায় একমাত্র জনসনের টিকা-ই প্রবাসীদের জন্য সহজ সমাধান হিসেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সাথে বিএমইটি কার্ডধারীদের পাশাপাশি যাদের কার্ড নেই কিন্তু বৈধ ভিসা আছে তাদেরও টিকা দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post