অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের আদর্শ ও দেশপ্রেমের ধারাবাহিকতা ছিল আমাদের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, তরুণ সমাজ ও ছাত্ররা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম করেছে। তাঁদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে রাষ্ট্র গঠনের যে দ্বিতীয় সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা যেন কোনোভাবেই অপচয় না হয়।
তিনি আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের পরও আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ব্যর্থ হয়েছিলাম। অতীতে একদলীয় মানসিকতা ও একটি দলের ব্যর্থতা সে সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছিল। আজকের দিনে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সেই ভুল আর পুনরাবৃত্তি না হয়।
শনিবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, যখন মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা সংঘবদ্ধভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে। এ পরিকল্পিত নিধনযজ্ঞ গোটা জাতি এবং বিশ্ববাসীকেও হতবিহ্বল করেছিল।
রাতের অন্ধকারে ঘাতকরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পী, সাহিত্যিক এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুর ও রায়েরবাজারের ডোবা-নালা ও ইটখোলাতে পাওয়া যায় তাঁদের নিথর দেহ। বুলেটবিদ্ধ এবং বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ছিল তাঁদের শরীর। অনেকের হাত ছিল পেছনে বাঁধা, নির্যাতনে শরীর ছিল বিধ্বস্ত।
১৯৭২ সালে প্রকাশিত জাতীয় সংকলন ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের তথ্যে জানা যায়, এ হত্যাযজ্ঞে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০ জন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকার ও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে। জাতির এই মহান সন্তানদের স্মৃতির প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা নিবেদন করাই আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post