প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় অনিবার্য জেনে জাতির মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে তারা বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করেছিল।
ড. ইউনূস বলেন, “স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্তে রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ছিল পরাজয়ের প্রতিশোধ। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে নেতৃত্বহীন ও মেধাশূন্য করে দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা শহরে প্রায় দেড় শতাধিক বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। তাদের চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। পরে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের গুলিবিদ্ধ এবং নির্যাতিত লাশ পাওয়া যায়। এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড শুধু জাতির জন্য নয়, পুরো বিশ্বকেও হতবিহ্বল করে দিয়েছিল।”
বুদ্ধিজীবী হত্যার পেছনের বর্বরতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, শিল্পী ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদদের হত্যা করে তারা জাতির মেধা ও নেতৃত্ব নির্মূল করার চেষ্টা করেছিল। এটি ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের চরম অমানবিক ও নিষ্ঠুর প্রতিশোধ।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ও তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারিভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। স্বাধীনতার উষালগ্নে এই নির্মমতা জাতিকে শোকাচ্ছন্ন করেছিল।
স্বাধীনতার পর, প্রকাশিত জাতীয় সংকলন ও আন্তর্জাতিক সংবাদে উল্লেখ করা হয় যে, বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় প্রায় ১,০৭০ জন মেধাবী সন্তানকে শহীদ করা হয়। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল জাতিকে প্রেরণা জোগাবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post