প্রযুক্তি খাতে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ধনকুবেরদের কাতারে উঠে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ রবিন খুদা এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ডেটা সেন্টার কোম্পানি ‘এয়ারট্রাঙ্ক’ সম্প্রতি মার্কিন বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ব্ল্যাকস্টোন ইনকরপোরেশনের কাছে বিক্রি হয়েছে ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকা)।
কোম্পানি বিক্রির পর রবিন কর্মীদের জন্য ২৬২ কোটি ৮১ লাখ টাকার (২২ মিলিয়ন ডলার) বোনাস ঘোষণা করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির ৩৩০ জন কর্মী জনপ্রতি প্রায় ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা (৬৫ হাজার ডলার) পেয়েছেন। এছাড়া, জ্যেষ্ঠ ১২০ জন কর্মীকে কোম্পানির লভ্যাংশ শেয়ার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
রবিন খুদা জানিয়েছেন, এ সাফল্যের পেছনে কর্মীদের অবদান অসামান্য। কর্মীদের তিনি পুরস্কৃত করতে চেয়েছিলেন, কারণ তাদের ছাড়া এ পর্যায়ে আসা সম্ভব হতো না। গত সোমবার কর্মীদের এই সুখবর দেন তিনি।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান রবিন খুদা। ২০১৬ সালে তিনি ‘এয়ারট্রাঙ্ক’ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুর দিনগুলো ছিল অত্যন্ত কঠিন।
প্রথম ডেটা সেন্টার চালু করতে গিয়ে নিজের সঞ্চয় শেষ করে ফেলেন। এমনকি কর্মীদের পেনশন তহবিল থেকে অর্থ নিতে বাধ্য হন।
এক সাক্ষাৎকারে রবিন বলেন, “২০১৬ সালের ক্রিসমাসে শুরু করেছিলাম, আর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের প্রথম ডেটা সেন্টার সরবরাহ করতে হয়েছিল। সেসময় আমি প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলাম এবং আইনজীবীর শরণাপন্ন হয়েছিলাম।”
‘এয়ারট্রাঙ্ক’ বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ডেটা সেন্টার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সিডনি, মেলবোর্ন, হংকং, টোকিও, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় এর ১১টি ডেটা সেন্টার রয়েছে। এসব সেন্টারে মাইক্রোসফট, গুগল ও অ্যামাজনের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলো তাদের তথ্য সংরক্ষণ ও পরিচালনা করে।
বিক্রির পরও রবিন কোম্পানির সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কোম্পানিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকা) প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
রবিন খুদার এই উদ্যোগ শুধু কর্মীদের জন্য অনুপ্রেরণা নয়, বরং প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের একটি অধ্যায়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post