লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চরলরেন্স গ্রামের হিরণ চন্দ্র শীল ইসলাম গ্রহণের পর নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন মুজাহিদ। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজো। পিতা জগদীশ চন্দ্র শীলের ছেলে মুজাহিদ ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ওমানে কর্মরত ছিলেন। সেখানেই ২০১৯ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। ধর্ম পরিবর্তনের পর বড় ভাই তার ভিসা বাতিল করে দেন এবং দেশে ফেরার পর পরিবারও তাকে ত্যাগ করে। ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি হারিয়ে একসময় দিশেহারা হয়ে পড়েন মুজাহিদ।

দেশে ফিরে তিনি একটি কোম্পানিতে মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন ও সংসার শুরু করেন। সীমিত আয়ে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে জীবনযাপন করতে গিয়ে পড়েন চরম সংকটে। ঠিক তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। সেলুন ব্যবসা শুরু করার জন্য আবেদন করলে যাচাই শেষে ফাউন্ডেশন থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা সহায়তা পান। ওই অর্থে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন নিজের সেলুন ‘আল আকসা সেলুন’, যা আজ তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
আরও


বর্তমানে মুজাহিদ তার হাফেজা স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস এবং দুই কন্যা মাইমুনা আক্তার ও সিদরাতুল মুনতাহাকে নিয়ে চরলরেন্স বাজার সংলগ্ন তুলাতলি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। বিভিন্ন ধর্মের বই পড়ে তিনি উপলব্ধি করেন, ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম।
মুজাহিদের ভাষায়, “আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন আমাকে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। দোকান পরিচালনা কমিটির সহায়তায় বাজারে বিনা ভাড়ায় দোকান পেয়েছি। এখন প্রতি মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় করি, এর মধ্যে ১০-১৫ হাজার টাকা সঞ্চয় হয়। আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালো আছি।” তিনি আরও জানান, তার সেলুনে ক্লিন শেভ করা হয় না, বরং মুসলমানদের দাড়ি রাখায় উৎসাহিত করেন তিনি।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উপজেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম জানান, “আমরা শুধু মুসলিম নয়, অন্যান্য ধর্মের মানুষকেও সহযোগিতা করে থাকি।” সম্প্রতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে মুজাহিদকে নিয়ে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন—“মুজাহিদের সেলুনে দাড়ি কাটা হয় না, তবুও তার সেলুনের সফলতা প্রমাণ করে—যে আল্লাহর সন্তুষ্টি চায়, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।










