মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) রাতে ইরাকের আইন আল-আসাদ বিমানঘাঁটির দিকে তিনটি ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা সফলভাবে ভূপাতিত করেছে। হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন কর্মকর্তারা।
খবরটি নিশ্চিত করেছে এপি নিউজ এজেন্সি, যারা দুজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে—উক্ত বিমানঘাঁটিতে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এই হামলার পেছনে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াশিংটন।
ইসরায়েল-ইরান সাম্প্রতিক সংঘাতকে কেন্দ্র করে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তেহরান মনে করছে, ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ মদদ রয়েছে, এবং সেই কারণেই ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরান এর আগেই হুমকি দিয়েছিল, সংঘাত শুরু হলে মার্কিন ঘাঁটিগুলো রেহাই পাবে না।
আরও পড়ুন
ফার্স নিউজ ও স্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল সূত্রে জানা গেছে, ইরান শুধু ইসরায়েলের ওপর নয়, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতেও একযোগে হামলার পরিকল্পনা করছে। ইরানের সামরিক পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়, যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়বে দখলদারদের নিয়ন্ত্রিত সব এলাকায়, যার মধ্যে মার্কিন ঘাঁটিও রয়েছে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের সব সামরিক ঘাঁটিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ইসরায়েল-ইরান পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষিতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকে যে কোনো মুহূর্তে হামলার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত ১৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী সামরিক ঘাঁটি পরিচালনা করছে। এর মধ্যে আটটি ঘাঁটি বাহরাইন, মিশর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত। এই ঘাঁটিগুলো এখন যেকোনো সময় বড় ধরনের সামরিক উত্তেজনার কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।