জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক ও জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী টম ফ্লেচার গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় প্রায় ১৪ হাজার শিশু মারাত্মক খাদ্য সংকটে মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে। মঙ্গলবার (২০ মে) বিবিসির রেডিও-৪-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
ফ্লেচার বলেন, ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজার পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল ও পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছাতে না পারায় এই ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে শিশুদের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে উঠেছে।
চাপের মুখে ইসরায়েল সোমবার প্রায় আড়াই মাস পর প্রথমবারের মতো গাজায় পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয়। তবে টম ফ্লেচার বলেন, এই পরিমাণ ত্রাণ ২০ লাখ মানুষের জন্য একেবারেই অপ্রতুল এবং একে ‘সমুদ্রে একটি পানির ফোঁটা’র সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি আরও জানান, এসব ত্রাণ এখনো গাজার সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ও পুষ্টিকর সামগ্রী নিয়ে এসেছে। তবে এসব সামগ্রী কেবল সীমান্ত পার হয়েছে, বাস্তবিকভাবে জনসাধারণের মধ্যে বণ্টন এখনো শুরু হয়নি, ফলে সংকট নিরসনে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব পড়েনি।
এদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের সামরিক অভিযান শুরু করে। এই হামলায় ইতোমধ্যে ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ। খাবার ও ওষুধের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত করায় আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা গাজার সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। তবে সীমিত সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়াকে যথেষ্ট মনে করছে না আন্তর্জাতিক সমাজ।