২০১৪ সালে ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ১৭ ফ্লাইট ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় রাশিয়াকে সরাসরি দায়ী করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইসিএও)। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বিমানের সকল ২৯৮ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।
মালয়েশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা বারনামার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (১৩ মে) আইসিএও পরিষদ এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসের যৌথভাবে দায়ের করা অভিযোগ তারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সংস্থাটি আগামী সপ্তাহগুলোতে রাশিয়াকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই এমএইচ১৭ ফ্লাইটটি আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়ে মাঝ আকাশে বিধ্বস্ত হয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত অনুপস্থিতিতে তিনজনকে – দুজন রাশিয়ান এবং একজন ইউক্রেনীয় নাগরিককে – এই হামলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। তবে, মস্কো এই রায়কে ‘কলঙ্কজনক’ আখ্যা দিয়ে অভিযুক্তদের হস্তান্তরের দাবি প্রত্যাখ্যান করে। অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডস এই রায়কে ‘বিচারের পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ফেল্ডক্যাম্প বলেছেন, “এই সিদ্ধান্ত কেবল সত্য উদঘাটনের দিকে একটি পদক্ষেপই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করলে তা বিনা বিচারে ছেড়ে দেওয়া হবে না।” অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং আশা প্রকাশ করেছেন যে, আইসিএও দ্রুত রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং রাশিয়া যেন তাদের দায় স্বীকার করে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এই রায় এমন এক সময়ে এসেছে যখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম সরকারি সফরে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।