জাপান প্রবাসী পপি ঘোষ (পপি রানী কর) প্রমাণ করেছেন, সন্তানের চরিত্র গঠন ও শিক্ষাজীবনে সফলতা অর্জনে একজন মায়ের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূর্ণতা না পেলেও তিনি নিজের সন্তানকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও দৃঢ় মানসিকতায় গড়ে তুলে আজ হয়েছেন এক অনুকরণীয় মা। তার একমাত্র ছেলে রণজিৎ কুমার ঘোষ ২০২০ সালে জাপানের শীর্ষস্থানীয় টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়, যা তাকে প্রবাসী সমাজে আলোচিত করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মেয়ে পপি ঘোষ ১৯৯৬ সালে স্বামী তপন কুমার ঘোষের সঙ্গে জাপানে যান। সংসারের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অপূর্ণ থাকলেও তারা সেই স্বপ্ন সন্তানদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের সংকল্প নেন। সাত বছর কঠোর পরিশ্রম করে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল হয়ে পপি ঘোষ পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে শিক্ষার সঠিক পরিবেশে গড়ে তুলতে শুরু করেন।
শৈশব থেকেই রণজিৎকে ভালো বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো, সহপাঠী ও স্থানীয় মায়েদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা, বিভিন্ন মেধা যাচাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানো—সব কিছুতেই অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। ফলস্বরূপ রণজিৎ জুনিয়র হাই স্কুল পর্যায় থেকেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। পরে সুগামু জুনিয়র হাই স্কুল ও সিনিয়র হাই স্কুলে পড়াশোনা শেষে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়সহ জাপানের আরও দুটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে।
আরও
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শেষ করার পর ২০২৪ সালে রণজিৎ স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়। পাশাপাশি কর্মজীবনের সুযোগও নিশ্চিত করে। ২০২৬ সাল থেকে সে জাপানের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান তোশিবা এনার্জি সিস্টেমসে কাজ শুরু করবে বলে চূড়ান্ত হয়েছে। হিটাচি ও মিতসুবিশির মতো বড় কোম্পানিতেও সুযোগ পেলেও টোকিওর কাছাকাছি হওয়ায় রণজিৎ বেছে নিয়েছে তোশিবা।
পপি ঘোষ মনে করেন, ছেলের এই সাফল্যে শুধু তিনি নন, তার স্বামী ও পরিবারও সমানভাবে অবদান রেখেছেন। তবে প্রবাস জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও সন্তানকে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে যে ত্যাগ ও নিষ্ঠা তিনি দেখিয়েছেন, তা অন্য অভিভাবকদের জন্য হতে পারে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। তাই তাকে আজ অনেকেই দেখছেন একজন সফল মা হিসেবে।










