মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কুখ্যাত আলকাট্রাজ কারাগার পুনরায় চালু ও সম্প্রসারণের জন্য তার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা সহিংস অপরাধীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” বিবিসি জানায়, আইন, শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে আলকাট্রাজ পুনরায় চালু করা হবে।
১৯৬৩ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই কারাগারটি বর্তমানে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজের কাছে অবস্থিত। ট্রাম্প তার পোস্টে বিচার বিভাগ, এফবিআই এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে কারাগারের ব্যুরোর সঙ্গে একত্রে আলকাট্রাজ সম্প্রসারণ ও পুনর্গঠনের নির্দেশ দেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই কারাগারে “আমেরিকার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস অপরাধীদের” রাখা হবে।
ট্রাম্পের এই নির্দেশ এল সালভাদরের একটি কারাগারে অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের পাঠানোর নীতি নিয়ে আদালতের সাথে তার দ্বন্দ্বের মধ্যে এসেছে। মার্চ মাসে তিনি ২০০ জনের বেশি ভেনেজুয়েলান সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যকে সেখানে পাঠান এবং “দেশীয় অপরাধীদের” বিদেশি কারাগারে পাঠানোর কথাও বলেন।
আরও পড়ুন
আলকাট্রাজের ইতিহাস বেশ পুরনো। এটি প্রথমে একটি নৌ প্রতিরক্ষা দুর্গ ছিল, যা ২০ শতকের শুরুতে সামরিক কারাগারে রূপান্তরিত হয়। ১৯৩০-এর দশকে বিচার বিভাগ এটি দখল করে ফেডারেল বন্দিদের গ্রহণ শুরু করে। কুখ্যাত গ্যাংস্টার আল কাপোন, মিকি কোহেন এবং জর্জ “মেশিন গান” কেলির মতো বিখ্যাত অপরাধীরা এখানে বন্দী ছিলেন।
আলকাট্রাজ কারাগারটি ১৯৬২ সালে বার্ট ল্যাঙ্কাস্টার অভিনীত “বার্ডম্যান অফ আলকাট্রাজ” চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও বিখ্যাত হয়েছিল। এছাড়াও ১৯৯৬ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র “দ্য রকে”র শুটিংও এই দ্বীপে হয়েছিল, যেখানে শন কনারি ও নিকোলাস কেজ অভিনয় করেন।
ফেডারেল ব্যুরো অফ প্রিজনসের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কারাগারটি চালাতে অত্যধিক ব্যয় হতো, যা অন্যান্য ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ছিল, কারণ এটি একটি দ্বীপে অবস্থিত। এই কারণেই ১৯৬৩ সালে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রাম্পের এই নির্দেশিকা কারাগারটিকে পুনরায় চালু করার জন্য অর্থনৈতিকভাবে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।