করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ঢাকা মাস্কাট রুটে বিমান চলাচল বন্ধের পর অবশেষে আগামী ৪ জুন থেকে পুনরায় ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ওমান ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি দেশের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুন) বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড ও রেগুলেশন্স বিভাগের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী এম জিয়া-উল কবির স্বাক্ষরিত এ সার্কুলার জারি করা হয়। এই ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৪ জুন থেকে ওমান প্রবাসীরা ওমান থেকে দেশে আসতে পারবেন। তবে আপাতত ওমান সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করার কারণে বাংলদেশ থেকে ওমান যেতে পারবেন না প্রবাসিরা। শুধুমাত্র ওমান থেকে দেশে আসতে পারবেন প্রবাসিরা।
এ ব্যাপারে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে নাম না প্রকাশের শর্তে প্রবাস টাইমকে তিনি মুঠোফোনে বলেন, “আগামী ৩ তারিখ রাত ১২টা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওমান থেকে প্রবাসিরা দেশে যেতে পারলেও দেশ আপাতত ওমান আসতে পারবেনা। ওমান সরকার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র অনওয়ে ফ্লাইট চলবে। আমরা আশা করছি আগামী ৪ তারিখ থেকে বিমানের প্রথম ফ্লাইট মাস্কাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।”
এছাড়াও করেনার অতিঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে ওমানের নাম বাদ দিয়ে ওমান থেকে দেশে ফিরলে ১৪ দিনের পরিবর্তে ৩ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের আইন করেছে বাংলাদেশ। বেবিচক জানায়, কুয়েত ও ওমান থেকে আসা প্রবাসীদের দেশে ফিরেই সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৩দিন থাকতে হবে। তিনদিন পর তাদের করোনা টেস্ট করানো হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও তাদের ১১ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড ও রেগুলেশন্স বিভাগের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী এম জিয়া-উল কবির স্বাক্ষরিত সার্কুলারটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১১টি দেশ থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে- আর্জেন্টিনা, বাহরাইন, বলিভিয়া, ব্রাজিল, ভারত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, প্যারাগুয়ে, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ও উরুগুয়ে।
সার্কুলারে নিষিদ্ধ ১১ দেশকে ‘গ্রুপ-এ’ ক্যাটাগরি উল্লেখ করে বেবিচক জানায়, দেশগুলো থেকে কোনো যাত্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি বাংলাদেশ থেকে এসব দেশে কেউ যেতেও পারবে না। তবে দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভিজিটররা সেসব দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের বাংলাদেশে পা রাখার আগেই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত হোটেল বুকিং করতে হবে।
এছাড়াও সার্কুলারে আরও ৮টি দেশকে ‘গ্রুপ-বি’ ক্যাটাগরি উল্লেখ করা হয়েছে। এই ক্যাটাগরির ৮টি দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের জন্য আরোপ করা হয়েছে কিছু বিধিনিষেধ। দেশগুলো হচ্ছে- বেলজিয়াম, চিলি, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, ডেনমার্ক, গ্রিস, কুয়েত এবং ওমান।
গ্রুপ-বি’র বাকি ৬ দেশ থেকে আসলে যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত হোটেল বুকিং করে আসতে হবে। তবে বাংলাদেশ থেকে যারা এই ৮টি দেশে যাবেন তাদের জন্য কোনো নির্দেশনা দেয়নি বেবিচক।
‘গ্রুপ-এ’ এবং ‘গ্রুপ-বি’তে উল্লেখিত ১৯ দেশ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বাংলাদেশে আসতে ইচ্ছুক সবাইকে (১০ বছরের ঊর্ধ্বে) যাত্রা শুরুর ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post