কারাগারে ৫ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করেছেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যারিস্টার সুমন নামে পরিচিত। তার সাথে গেলো ১৫ নভেম্বর দেখা করতে যান তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও চেম্বার পার্টনার এম লিটন আহমেদ।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে তিনি বলেন পুরাই বদলে গেছেন ব্যারিস্টার সুমন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছেন। কারাগারে ঘুম থেকে ওঠেন ফজরের আজানের আগেই। আইনজীবী লিটন আহমেদ আরও বলেন, ব্যারিস্টার সুমনের জেল সঙ্গী হলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এদের দুজনের সঙ্গে একই রুম শেয়ার করতে হয় ব্যারিস্টার সুমনকে। সাথে রয়েছেন এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাও।
জেলে ডিভিশন পেয়েছেন আলোচিত এই ফেসবুক সেলিব্রেটি। তবে ব্যারিস্টার সুমন কষ্টে আছেন তার সঙ্গে মোবাইল ফোন না থাকায়। কারণ আগে সার্বক্ষণিক মোবাইলে নিজের একাউন্টে যেতেন এখন যেটি একেবারেই বন্ধ।
ব্যারিস্টার সুমনের আইনজীবী লিটন আহমেদ বলেন, কারাগারে দুইটি জাতীয় পত্রিকা পান সুমন, যার খুঁটিনাটি পড়ে দিন পার করেন তিনি। তবে ব্যারিস্টার সুমন তার সহকর্মীকে বলেন, যেদিন আদালতে তোলা হয় সেদিন মন খারাপ থাকে। কারণ তার হাতে হাতকড়া পড়ানো থেকে শুরু করে কোর্টে নেয়া সেখানে অন্য সহকর্মীদের দেখে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন তার চেম্বার পার্টনারকে আরও বলেন, জেল জীবন কষ্টের কারণ ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখেই কারা সেলে ঢুকে পড়তে হয়, খাবার খেয়ে নিতে হয়। এটা স্বাভাবিক জীবনে মানা কষ্টের।
জেলের ভেতর কি খান সুমন অথবা খাবার নিয়ে অসন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নে তার আইনজীবী বলেন, যে খাবার দেয় তাই খেয়ে নিতে হয় তাকে। বাইরের খাবারের সুযোগ পাননা বললেই চলে।
সারাদিন কি করেন ব্যারিস্টার সুমন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হাটাহাটি করেন। কখনো সকালে, কখনো বিকেলে। তবে সেখানেও তাকে দেখলে অন্য কয়েদিরা ‘সুমন ভাই’ ‘সুমন ভাই’ ডাক শুরু করেন। এতে কখনো কখনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এ কারণে সেলের বাইরে হাটাতেও কিছু বেগ পেতে হয় তাকে।
আইনজীবী লিটন আহমেদ বলেন, কারাগারে থেকে পরিবারকে মিস করেন ব্যারিস্টার সুমন। কারণ সপ্তাহে মাত্র একবার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পান তিনি।
৫ অগাস্টের আগে-পরে যে কয়েকজন এমপি-মন্ত্রীর দেশ ছাড়ার খবর বেরিয়েছিল তার মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনের নামও ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সরকার পতনের প্রায় আড়াই মাস পর ২১ অক্টোবর গভীর রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পুলিশ। এরপর সেই মামলায় রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৬ মামলা হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post