ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের কোনো দেশের নাগরিক হিসাবে ইউরোপে বৈধপথে প্রবেশের পর কী কী তথ্য জেনে রাখা ভালো। এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অভিবাসন বিষয়ক ওয়েবসাইট ইনফোমাইগ্রেন্টস।
এসব তথ্য যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্ক ছাড়া ইইউ সদস্য মোট ২৫টি রাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু সেক্ষেত্রেও, বিধিনিষেধ এক দেশ থেকে আরেক দেশে বদলাতে পারে।
পরিবারকে নিয়ে আসা
ইইউ এর বাইরের কোনো দেশের নাগরিক হিসাবে বৈধ উপায়ে ইউরোপে বসবাস করলে পরিবারকে নিয়ে আসার অধিকার পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর ভূমিকা থাকে একজন পৃষ্ঠপোষকের। এই বিধির আরেকটি নাম ’ফ্যামিলি রিইউনিয়ন’।
এক বছর ধরে ইউরোপে বসবাস করার পর পরিবারকে আনার অনুমতি মেলে। শুধু তাই নয়, প্রথম বছরের পরেও ইউরোপে থাকার পর্যাপ্ত কারণ থাকলেই, পরিবারকে আনতে পারবেন কোনো ব্যক্তি। কোনো কোনো ইউরোপীয় দেশের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা দুই বছরও হয়ে থাকে।
এই বিধির আওতায় কোনো ব্যক্তি নিজের স্ত্রী, স্বামী বা পার্টনারকে নিয়ে আসতে পারেন। যেহেতু ইউরোপে বহুবিবাহ গৃহীত নয়, সেক্ষেত্রে শুধু একজন পার্টনারকেই আনার অনুমতি মেলে। এছাড়া, আবেদনকারী নিজের সন্তানকেও এই ধারায় নিয়ে আসতে পারেন।
স্ত্রী, স্বামী বা পার্টনারকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে আবেদনকারী ও তার পার্টনার দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক ও বিবাহযোগ্য বা ২১ বছর বয়সী।
এছাড়া, নির্দিষ্ট দেশের নিয়ম অনুসারে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবেদনকারীর ওপর নির্ভরশীল প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান ও বাবা-মাকেও ইউরোপে নিয়ে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা আবেদনকারীর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ও নিজ দেশে তাদের সঠিকভাবে দেখভাল করার কেউ নেই।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে পরিবারের জন্য বাসস্থান, স্বাস্থ্যবিমা ও অন্যান্য খরচ দিতে তিনি সক্ষম।
এই বিধিতে ইউরোপে আসলে পরিবারের সদস্যরা কাজ ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে বৈধভাবে বসবাস করা মানুষদের সমান অধিকার পাবেন।
দীর্ঘমেয়াদী থাকার অনুমতি
বৈধভাবে ইউরোপে পাঁচ বছর থাকার পর দীর্ঘমেয়াদী রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করার সুবিধা রয়েছে। এই পারমিট পেলে একজন ব্যক্তি ইইউ নাগরিকের মত সকল সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি পাঁচ বছর ধরে একটানা কোনো ইইউ সদস্য রাষ্ট্রে থাকছেন ও সেখানে তার যথেষ্ট আয় ও স্বাস্থ্যবিমা রয়েছে।
কোনো কোনো দেশে এই পারমিট পেতে গেলে প্রমাণ করতে হয় যে আবেদনকারী সেই দেশের ভাষা ও ইতিহাস সম্বন্ধে ধারণা রাখেন।
একাধিক ইইউ রাষ্ট্রে চলাফেরা
৯০ দিনের কম মেয়াদের বা স্বল্পমেয়াদী শেনজেন ভিসায় ইউরোপে প্রবেশ করলে শেনজেনভুক্ত যেকোনো দেশে যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আলাদা করে কোনো দেশের ভিসার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে শেনজেনভুক্ত এলাকার মধ্যে ক্রোয়েশিয়া, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, রোমানিয়া, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য নেই।
দীর্ঘমেয়াদী বা ৯০ দিনের বেশি সময়ের জন্য প্রদত্ত ভিসা থাকলে শেনজেনভুক্ত অঞ্চলগুলোতে যাতায়াত করা যায়। সেইসব অঞ্চলে ৯০ দিনের বেশি সময়ের জন্য থাকার জন্য নির্দিষ্ট দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে ও যথেষ্ট কারণ দেখাতে হবে।
ইউরোপীয় সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক
যে সমস্ত ইইউবহির্ভূত রাষ্ট্রের নাগরিকেরা বৈধ উপায়ে ইউরোপে বসবাস করেন, তাদের থাকার অনুমতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ইউরোপের সামাজিক নিয়মাবলীকে শ্রদ্ধার বিষয়টি। অভিবাসীদের এই নিয়মাবলী সম্পর্কে অবগত করতে বিভিন্ন দেশের বিশেষ প্রশাসনিক দপ্তর রয়েছে, যারা এই কাজে অভিবাসীদের সহায়তা করে থাকেন।
জার্মানির ইন্টিগ্রেশন কোর্স এই ধরনের প্রকল্পের অন্যতম। এছাড়া, রয়েছে দেশভেদে নানা ধরনের অ্যাপ ও অনলাইন পরিষেবা, যার মাধ্যমে অভিবাসীরা সেই দেশ বা ইউরোপের সাধারণ নিয়মাবলী সম্পর্কে আরো বিশদে জানতে পারেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post