ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এসময় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তুরস্কের অবস্থানের কথা জানান এরদোয়ান। তিনি বলেন, দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তুর্কিদের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
রোববার (১৬ মে) তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। খবর আনাদুলোর। ফোনে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলের বেপরোয়া হামলার বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের শক্তিশালী বার্তা দেয়া উচিত। ইসরায়েলি সহিংসতা বন্ধে মুসলিম বিশ্বের অভিন্ন আলোচনা এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। বিবৃতিতে বলা করা, দুই নেতা তাদের কথোপকথনের সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধু কুইজ প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ সঠিক উত্তরদাতা একশত জনের তালিকা দেখুন এই লিংকে
http://www.probashtime.net/quiz/
এদিকে ফিলিস্তিনের জেরুজালেম ও গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ইস্যুতে রোববার (১৬ মে) ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এদিন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুত সাবুসোলু বৈঠকে উপস্থিত নির্বাহী কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করা আমাদের সকলের মানবিক দায়িত্ব। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ফিলিস্তিদের ভাই-বোনদের বাঁচাতে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সব প্রকার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের উদ্যোগে এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওআইসিভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে বক্তব্য দেন। বক্তব্যে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়।
এদিকে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা এবং জেরুজালেমে বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক লাখ মানুষ। শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিও অংশ নেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মে) সকাল ১১টা থেকেই সেন্ট্রাল লন্ডনের মার্বেল আর্চ এলাকায় জড়ো হতে থাকেন ইসরাইল-বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। প্রতিবাদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। ‘ইসরাইল বের হও’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীনতা’সহ নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভকারীরা হাইড পার্ক হয়ে লন্ডনস্থ ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে এসে সমাবেশ করে।
অপরদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় হতাহতের ঘটনায় হতবাক হয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। একইসঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলে চালানো রকেট হামলায় হতাশ হয়েছেন তিনি। খবর আনাদুলুর। রোববার (১৬ মে) জাতিসংঘ নিরাপত্ত পরিষদে (ইউএনএসসি) দেওয়া এক বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব ইসরায়েল এবং লিফিস্তিনকে ‘রক্তপাত, সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞ’ অবসান ঘটিয়ে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য আলোচনায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংঘাত একেবারেই ভীতিকর। চলমান সহিংসতা কেবল মৃত্যু, ধ্বংস এবং হতাশার চক্রকে স্থায়ী করছে এবং সহাবস্থান ও শান্তির যে আশা তা প্রত্যাখ্যান করে আরও দূরে ঠেলে দিচ্ছে।’ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংঘাত এবং গাজায় ইসরায়েলের চলমান বিমান হামলায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করতে ইউএনএসসি তৃতীয়বারের মতো বৈঠক করেছে।
গুতেরেস বলেন, ‘একদিকে রকেট ও মর্টার এবং অন্যদিকে বোমা হামলা বন্ধ করতে হবে।’ জাতিসংঘ যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে জানিয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, উত্তপ্ত বক্তৃতার অবসান এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রশমিত করা সবপক্ষের নেতাদের দায়িত্ব।’
গুতেরেস বলেন, নারী ও শিশুসহ ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় তিনি ‘হতবাক’। একইসঙ্গে গাজা থেকে চালানো রকেট হামলায় ইসরায়েলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে তিনি ‘হতাশ’। জাতিসংঘের প্রধান সতর্ক করে বলেন, চলমান সংঘাত কেবল ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের জন্যই নয়, পুরো অঞ্চলকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং পুরো অঞ্চলের জন্য একটি নতুন বিপদ তৈরি করতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post