‘ভারতের লোকদের ৫০ শতাংশের ভালো কোনো শৌচাগার নেই। আর আমাদের ৯০ শতাংশ লোকই ভালো শৌচাগার ব্যবহার করেন।’ সামাজিক অনেক সূচকে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই কথা বলেছেন।
‘বাংলাদেশের মানুষ খেতে পায় না, তাই ভারতে আসে’ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। অমিত শাহ’র ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যপারে অমিত শাহের জ্ঞান সীমিত। আমাদের দেশে এখন কেউ না খেয়ে মরে না, এখানে কোনো মঙ্গাও নেই।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার অমিত শাহের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা। সেখানে অমিত শাহের কাছে জানতে চাওয়া হয় গত ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশের তো আর্থিক উন্নয়ন হয়েছে। তা-ও কেন লোকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ করছে?
জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘এর দুটো কারণ আছে। এক, বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকায় নিচুতলায় পৌঁছেনি। যে কোনো পিছিয়ে-পড়া দেশে উন্নয়ন হতে শুরু করলে সেটা প্রথম কেন্দ্রে হয়। আর তার সুফল প্রথমে বড়লোকদের কাছে পৌঁছায়। গরিবদের কাছে নয়। এখন বাংলাদেশে সেই প্রক্রিয়া চলছে। ফলে, গরিব মানুষ এখনও খেতে পাচ্ছে না। সে কারণেই অনুপ্রবেশ চলছে। আর যারা অনুপ্রবেশকারী, তারা যে শুধু বাংলাতেই থাকছে, তা নয়। তারা তো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। জম্মু-কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। দ্বিতীয়, আমি মনে করি এটা প্রশাসনিক সমস্যা। প্রশাসনিক ভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে।’
বাংলাদেশকে নিয়ে অমিত শাহের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক জ্ঞানী লোক আছেন, যারা দেখেও দেখেন না। জেনেও জানেন না। তবে তিনি (অমিত শাহ) যদি সেটা বলে থাকেন, আমি বলবো- বাংলাদেশ নিয়ে তার জ্ঞান সীমিত। বরং ক্ষেত্র বিশেষে বাংলাদেশ তাদের দেশ থেকে অনেক এগিয়ে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক যখন এতটা গভীর, তখন এ ধরনের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা যদি এ ধরনের চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আমি বলব, তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। আমার দেশের শিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব আছে। তবে কম শিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব নেই। আর ভারতের এক লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে চাকরি করে। তাই আমাদের ভারতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post