সাগরপথে পাচারের প্রস্তুতিকালে কক্সবাজারের টেকনাফ সৈকত এলাকা থেকে দালালসহ ২৩ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত তিন দিনে অর্ধশতাধিক মালয়েশিয়াগামী আটক হলেন।
বুধবার সকালে মালয়েশিয়া গামীদের আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
ওসি বলেন, বুধবার দিবাগত রাতে মানব পাচারকারী একটি চক্র টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশে জমায়েত করে। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় একটি বাড়ি থেকে তিন দালালসহ ২৩ মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৭ পুরুষ, ৫ নারী ও ১ শিশু রয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আটক দালালরা হলেন, লোনা বেগম (৩৫), মো. আব্দুল্লাহ (৩০) ও মো. রিদুয়ান (২৮)। তারা টেকনাফের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এক দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশের জালে আটক হওয়ার পর আর যাওয়া হয়নি।
মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা নারী উম্মে হাবিবা বলেন, চার লাখ টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করি। এজন্য দালালকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি ৩ লাখ টাকা মালয়েশিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দালালরা টেকনাফের একটি বাড়িতে ২দিন আটকে রাখে। অবশেষে যাত্রার প্রস্তুতিকালে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি। তিনি আরও বলেন, আরও বাড়িতে ও পাহাড়ে আরও অনেক রোহিঙ্গা আটক রয়েছে।
পুলিশের হেফাজতে থাকা চট্টগ্রামের পতেঙ্গার বাসিন্দা মো. শাজাহান বলেন, আমরা দুজন টেকনাফে পরিচিত বন্ধু শাহ আলমের কাছে বেড়াতে এসেছি। একদিন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে স্থানীয় দালাল মো. ইসমাইলকে দিয়ে আসে আমাদের। পরে দালাল আমাদের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর জানতে পারি আমাদের দুজনকে ৪০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ার যাত্রী হিসেবে তাদের (দালালদের) কাছে বিক্রি করে দেয়।
নুর কায়াস নামের এক রোহিঙ্গা তরুণী বলেন, আমার বোন মালয়েশিয়া থাকে। মালয়েশিয়ায় আমার বিয়ে ঠিকঠাক হয়েছে। তাই বিয়ে করতেই তিনি মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন। দালালকে কেউ চিনে না তারা। অনেকেই মালয়েশিয়া থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ধৃত দালালের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে নতুন করে মামলা দায়ের করা হবে। তার আগে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রোহিঙ্গাদের তাদের ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
এর আগে সোমবার মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা বলে কক্সবাজারের ইনানী উপকূলীয় এলাকা থেকে নারী-পুরুষসহ ২৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post