করোনা আক্রান্ত রোগী যেন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শূন্যতা অনুভব না করেন তার জন্য এক অভিনব পন্থা বের করেছেন ব্রাজিলের নার্সরা। হাসপাতালের শয্যায় রোগী যেন মনে করেন কেউ তার হাতটি ধরে রেখেছেন, সেই উপায় বের করেছেন দেশটির একদল নার্স। নার্সরা একবার ব্যবহারযোগ্য গ্লাভসের ভেতর গরম পানি ভরে তা বেঁধে দেন। এভাবে পানিভর্তি দুটি গ্লাভস রোগীর হাতের তালুর নিচে ও ওপরে দেওয়া হয়। রোগীর মনে হবে কেউ তাকে পরম মমতায় ধরে রেখেছেন।
আইসোলেটেড রোগীর এমনই একটি ছবি গালফ নিউজের ওপিনিয়ন এডিটর সাদিক সামির ভাট টুইটারে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘বিধাতার হাত’। ব্রাজিলিয়ান একটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে আইসোলেটেড রোগীদের একটু মানসিক শান্তি ও সাহস জোগাতে নার্সদের চেষ্টা। একবার ব্যবহারযোগ্য দুটি গ্লাভসে সহনীয় মাত্রার গরম পানি ভরে হাতের অনুকরণে মানবিক স্পর্শ। সম্মুখসারির যোদ্ধাদের স্যালুট।’
পোস্ট করার পর মুহূর্তে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। এই ছবিটিকে সবাই বর্তমান সময়ে খুবই মর্মস্পর্শী বলে মনে করছেন। ছবিটি পোষ্ট করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিশালসংখ্যক রোগী সামলাতে গিয়ে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাও ভেঙে পড়ার দশা।
বর্তমানে করোনা নিয়ন্ত্রণে নিতে সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই লকডাউন অনন্তকাল রাখা সরকারের পক্ষে সম্ভব না। সেইসাথে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হলেও পুরো পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষের সবার হাতে হাতে এই ভ্যাক্সিন পৌঁছাতে কম করে হলেও ৩-৪ বছর লাগবে। এমতাবস্থায় এই করোনা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের নিজদের কিছু অভ্যাস ত্যাগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
যার মধ্যে এক নাম্বারেই হচ্ছে, কথায় কথায় মুখে আঙুল দেয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় লাগিয়ে কাগজ উল্টানো, থুতু দিয়ে টাকা গোনার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। সেইসাথে মাস্ক পড়া, সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখা এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ধূমপান যথাসম্ভব পরিহার করা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং আশেপাশে পরিষ্কার রাখা।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইমিউনিটি বুস্ট করতে হবে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটা শারীরিক এবং মানুষিক দুইটাই বৃদ্ধি করতে হবে।
এরমধ্যে শারীরিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
* নিয়ম মাফিক প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। মনে রাখবেন, রাত জাগা খুব খারাপ শরীর ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য।
* প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে, প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। মাসল এক্টিভিটি বাড়াতে হবে ।
* ভিটামিন ডি’র জন্য রোদে ঘুরতে হবে।
খাবারের মধ্যে কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হবে:
• ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে।
• প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
• এন্টি অক্সিডেন্ট-যুক্তখাবার শাক সবজি খেতে হবে।
• ভিটামিন সি বা টকযুক্ত ফল, কমলা, লেবু খেতে হবে। এছাড়াও সিজনাল ফল খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে লেবু সিদ্ধ গরম পানি মধু দিয়ে খেতে পারেন।
• ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে এবং চিনি কিংবা লবণ খাওয়াও কমাতে হবে ।
• লং, লবঙ্গ, জিরা, হলুদ, দারুচিনি এইগুলো মারাত্মকভাবে ইমিউনিটি বুস্ট করে। দুধে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। চায়ে মশলা মিশিয়ে খাবেন। গ্রিন টিতে এন্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে।
• কালোজিরা কার্যকরী একটা জিনিস। প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে এক চামচ মধুর সাথে কালোজিরা অনেক উপকারী। এছাড়াও কালোজিরা ভর্তা/ভাজি খাবারের সাথেও খেতে পারেন।
সর্বশেষ মানুষিক শক্তি বাড়াতে ইমিউন বুস্টের জন্য সঠিক হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা খুব জরুরি। তাই মনকে শান্ত রাখতে হবে, হাসি খুশি থাকতে হবে এবং সাহসী হতে হবে। সর্বপরি ধর্মীয় কাজে মন দিলে মানুষিক ভাবে প্রশান্তি পাবেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post