চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কাছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাবদ ৪৫০ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ওই ভ্যাট আদায়ে জোর দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা বকেয়া রয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এই অর্থ আদায়ে বারবার তাগাদা দিলেও তা পরিশোধ করা হয়নি।
এই অর্থ আদায়ে এনবিআর থেকে চবক চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এসব ভ্যাট মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান আজকের পত্রিকার কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে ৪৬৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ভ্যাট বকেয়া থাকার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘বকেয়া ভ্যাট আদায়ে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এখনো আমরা এই বকেয়া ভ্যাট আদায় করতে পারিনি। কয়েক দফায় বৈঠকও করা হয়েছে। আশা করছি, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি সুরাহা হবে।
বন্দর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সেবা খাতের বিপরীতে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭৬ কোটি ২০ লাখ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ভ্যাট বাকি রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করে ৩০৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা অপরিশোধিত ভ্যাটের তথ্য উদ্ঘাটন করা গেছে। সব মিলিয়ে ৪৬৭ কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে বন্দরের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, এনবিআর যে সময়ের ভ্যাটের কথা বলছে, সে সময়ে ভ্যাট বিভাগের কোনো নির্দশনা ছিল না। ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে কোনো ভ্যাট সংগ্রহ করেনি। তাই ভ্যাট বিভাগ যে ভ্যাট দাবি করছে, তা অযৌক্তিক। আর ওই ভ্যাট এখনো বকেয়া রয়েছে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে চট্টগ্রামের ভ্যাট কমিশনার আমাদের অফিসে এসেছিলেন। আমাদের চেয়ারম্যানসহ মিটিং করেছি। সেখানে আমরা বলেছি, আদেশের আগে যেহেতু সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ভ্যাট নেওয়া হয়নি। তবে যখন থেকে এনবিআরের ভ্যাট সংগ্রহের আদেশ জারি করা হয়েছে, তারপর থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করেছি এবং সরকারি কোষাগারে জমাও দেওয়া হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়, ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সেবা গ্রহণকারী হিসেবে শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ফ্রেইট ফরওয়ার্ডদের তথ্য সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে ভ্যাট আদায়ে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post