ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়িয়া গ্রামে মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় মাতব্বরদের লংকাকাণ্ড। ৬ মাস একঘরে থেকে মাতব্বরদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে সমাজে উঠতে হলো উক্ত প্রবাসীর স্ত্রীকে। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরদের মাঝে ঘটেছে হামলা-পাল্টা হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাতে ওই গ্রামের গাছাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানায়, ১ বছর পূর্বে ওই গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী নবাই মণ্ডলের স্ত্রী দিপালী বেগম স্বামীকে রেখে একই উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের বাবলুকে বিয়ে করে। সেখানে আড়াই মাস সংসার করার পর বাবলু তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে দিপালী বেগম বাবার বাড়িতে ছিল।
৬ মাস পূর্বে নবাই মণ্ডল তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করে আবারো বিয়ে করে বাড়িতে আসতে বলে। দিপালী বেগম বাড়িতে এলে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য কলিম উদ্দিন, গ্রাম্য মাতব্বর আলম হোসেন, কাশেম মণ্ডল, মুকাদ্দেস মণ্ডল, ইসাহাক মণ্ডল তাকে একঘরে রাখার নির্দেশ দেয়। সেই সাথে কেউ তার বাড়িতে গেলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে বিধি-নিষেধ জারি করে। সন্তানদের নিয়ে একঘরে থেকেই চলছিল দিপালীর দিন।
গত বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে ইসাহাক মণ্ডল দিপালীর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য মাতব্বরদের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেয়। এসময় কাশেম মণ্ডল, আলম হোসেনের লোকজন ইসাহাককে লাঞ্ছিত করে। এ নিয়ে বুধবার (৭ এপ্রিল) রাতে দিপালীর বাড়িতে আলম হোসেন, কাশেম মণ্ডল, মুকাদ্দেস মণ্ডলসহ স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ বৈঠক বসান। একঘরে থেকে সমাজে উঠতে দিপালী বেগমকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে মাতব্বররা। সেই সাথে ইসাহাক দিপালীর বাড়িতে এসেছেন সেই অপরাধে তাকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
দিপালী বেগম বলেন, আমার সমাজে উঠতে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে মাতব্বররা। আমি অনুরোধ করে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সকালে আলম মাতব্বরের হাতে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। এদিকে এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে ওই গ্রামের মাতব্বর কাশেম মোল্লার সাথে ইসাহাকের লোকজনের বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে কাশেমসহ চারজন আহত হয়।
এ ঘটনার পর রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য কলিম উদ্দিন, কাশেম ও ইসাহাকের লোকজন ওই গ্রামের কাওছার মণ্ডল, মাসুদুল মণ্ডল, তোতালেব মণ্ডল, রেজাউল ইসলাম, তাহা মণ্ডল, ইসলাম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও গহনাসহ নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল একটি ঘটনা ঘটেছে। বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post