অনেকেই হয়তো দামি বাড়ি, দামি কাপড়, বা দামি গয়না দেখেছেন। কিন্তু কখনও কি এমন গাড়ি দেখেছেন, যার দাম একটি ছোট দেশের বাজেটের সমান? হ্যাঁ, এমন একটি গাড়ি আছে, যার দাম এত বেশি যে, তা কিনতে হলে অনেককেই পুরো পকেট খালি করতে হবে। এমনকি বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরাও এই গাড়ি কেনার আগে ১০০ বার ভাববেন!
তবে এত দামি হওয়ার পরেও, এই গাড়ি ব্যবহার করা একেবারে সহজ নয়। রাস্তায় কোথাও পার্ক করা থাকলে এবং কোম্পানির কেউ তা দেখে ফেললে, গাড়িটি সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে। এমনকি, গাড়ির মালিক যদি নিজের ইচ্ছামত কোনো পরিবর্তন আনতে চান, সেটাও সম্ভব নয়। যেন টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেও ভাড়া নেওয়ার মতো অবস্থা! কেন এমন বিশেষ অধিকার ধরে রাখে কোম্পানি? আজ জানাবো সে রহস্য।
রোলস রয়েস, যা সবসময়ই এক্সক্লুসিভ গাড়ির জন্য পরিচিত, এবার বাজারে এনেছে রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল। এটি ভেঙেছে সব রেকর্ড, কারণ এই বিলাসবহুল গাড়ির দাম ৩২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সমান! তাই এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি। রোলস রয়েসের মতে, এই গাড়িটি এক গোলাপ ফুলের মতো, যা শুধু ধনীদের জন্যই তৈরি। কিন্তু সব ধনী ব্যক্তিরাও এটি কিনতে পারবেন না! কোম্পানি ক্রেতার স্ট্যাটাস যাচাই করে এবং নিশ্চিত হয় যে তিনি সত্যিই এই গাড়ি ব্যবহারে যোগ্য কিনা।
কিন্তু কেন এর মূল্য এত আকাশচুম্বী? রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে হাজার হাজার ঘণ্টা। এর ডিজাইন অত্যন্ত আকর্ষণীয়, আর এতে আছে বিশেষ কিছু ফিচার। পেইন্টের পাশাপাশি গাড়ির সরঞ্জামেও রয়েছে বিলাসিতার ছোঁয়া। গাড়ির কাঠের কাজগুলোতে এমন বিশেষ পলিশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা আলোতে চকচকে দেখায়।
গাড়িটির এক্সটেরিয়র ডিজাইন করতে ১৫০টির বেশি বৈচিত্র্য পরীক্ষা করা হয়েছে। ফ্রান্সের একটি বিশেষ গোলাপের সৌন্দর্যে অনুপ্রাণিত হয়ে গাড়িটি ডিজাইন করা হয়েছে, যার একটি গাঢ় লাল রং আছে, যা ছায়ার পড়লে কালো দেখায়। এই বিলাসবহুল গাড়িতে আছে দুটি দরজা ও দুটি আসন।
ইন্টেরিয়রের কথা বললে, গাড়িতে আছে ১,৬০০ এর বেশি হাত তৈরি কাঠের উপাদান। রোলস রয়েসের ইঞ্জিনিয়ার দল প্রায় ৫ বছর ধরে এই গাড়িটি ডিজাইন ও নির্মাণ করেছে। গাড়ির ড্যাশবোর্ডে আছে অডমার্স পিগুয়েট রয়্যাল ওয়াক কনসেপ্টের ঘড়ি। আর গাড়িটির গতি এত বেশি যে, এটি ০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছাতে সময় নেয় মাত্র ৫ সেকেন্ড।
এ ছাড়া, রোলস রয়েস গাড়ির কাস্টমাইজেশনের জন্য বিখ্যাত। গ্রাহক যে রকম চান, সেই অনুযায়ী গাড়িটি সাজিয়ে দেয় সংস্থা। এই গাড়ির এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ৩০টি ফ্রিজের শক্তি সমান!
গাড়িটির ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে ইলেক্ট্রোক্রোমিক কাঁচ, যা একটি বোতাম টিপেই স্বচ্ছ থেকে কালো হয়ে যায়। এতে রয়েছে একটি পরিবর্তনযোগ্য হার্ডটপ যা আধুনিক প্রযুক্তির এক প্রতীক। তবে, রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল শুধুমাত্র একটি গাড়ি নয়, এটি একটি স্টেটমেন্ট। ধনীরা মনে করেন এটি তাদের সম্পদ এবং সুনামের প্রতীক। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরাই সামর্থ্য রাখেন এমন চোখ ধাঁধানো গাড়ি কেনার। বিশ্বে মোট পাঁচটি রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল বানানো হবে, যা গ্রাহকদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাস্টমাইজ করে দেবে রোলস রয়েস।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post