রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় নিহত দুজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নাসিরের ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মুন্নার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। মুন্নার লাশ নিতে মায়ের সঙ্গে মর্গে আসে দেড় বছর বয়সি কন্যা মুসকান। এ দৃশ্য দেখে মর্গের সামনে উপস্থিত অনেকের চোখে পানি চলে আসে।
এদিকে হত্যার ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা করেনি কোনো পরিবার। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে অনেককে শনাক্ত করা হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তাদের ধরতে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর রায়ের বাজার এলাকার কিশোর গ্যাং চক্রের মূলহোতা ইমন ওরফে এলেক্স ইমনের নেতৃত্বে সানী, পারভেজ ও রাজিবসহ গ্যাংয়ের শতাধিক সদস্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে নাসির ও মুন্নাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত মুন্না হাওলাদারের স্ত্রী সিমু আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী এলেক্স ইমন ও পারভেজসহ শতাধিক কিশোর গ্যাং আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা মুন্নার হাত-পাসহ শরীরের বেশিরভাগ রগ কেটে ফেলে। ওই সময় নাছির বিশ্বাস নামে আরেকজনকেও হত্যা করা হয়। তাদের বাধা দিতে আশপাশের লোকজন ছুটে গেলে তাদের ওপরও হামলা করে গ্যাংয়ের সদস্যরা।
সিমু আক্তার বলেন, সন্ত্রাসীদের কারণে আমার দেড় বছরের বাচ্চাটা বাবা হারাল। সব সময় বাবা বাবা বলে ডাকাডাকি করে। বাবার খুব আদরের ছিল মেয়েটি। এখন শিশুটিকে নিয়ে কার কাছে যাব। কে আমাদের দেখবে। তিনি স্বামী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, আমার জীবন দিয়ে হলেও স্বামী হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে লড়াই করব।
মুন্না হাওলাদের বাবা বাবুল মিয়া জানান, আমার ছেলের খুনিদের কঠিন শাস্তি চাই। যারা তাকে খুন করেছে তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। রায়েরবাজার কবরস্থানে ছেলের লাশ দাফন শেষে থানায় মামলা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নাসিরের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর নিয়ে দাফন করা হবে। দুপুরের পর তার লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওয়ানা হন স্বজনরা। নাসিরের বড় ভাই ইসলাম বিশ্বাস বলেন, তারা গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনিত নাসিরের লাশ দাফন করবেন। বাড়ি থেকে ফিরে মামলা করবেন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার জানান, হামলায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে। শিগগির তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, হত্যার ঘটনায় দুই পরিবারের কেউ থানায় মামলা করেনি। দাফন শেষে দুই পরিবার মামলা করবে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post