বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে গৃহকর্মী লিজা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর রমনা মডেল থানার মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিকে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ফজলু নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর ভাষানটেক থানার মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। এদিন তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
এদিন সকাল ৯টার দিকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজতখানায় রাখা হয়। ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়। এসময় আইনজীবীরা তাদের কটূক্তি করতে থাকেন। আইনজীবীরা বলেন, মুরগি বাবা, মুরগি খাবা। শাপলা চত্বরের খুনি। শ্যামল দত্ত দালালি করছ। মোজাম্মেল বাবু কই? এরা সাংবাদিক, তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এসময় একজন সিনিয়র আইনজীবী এসব বলতে বারণ করেন। এতে তোপের মুখে পড়েন তিনি। বলেন, ওদের দালালি করবেন না। দালালির দিন শেষ। শাহরিয়ার কবির শাহবাগের নাস্তিক। আলেম, মসজিদ, মাদ্রাসার বিরুদ্ধে তার সব কথা।
১০টার কিছু আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবিরের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুকও রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
পরে আদালত জানতে চান, তারা কিছু বলবেন কি না। তখন শাহরিয়ার কবির বলেন, আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারি না। আমি ১০০ এর ওপরে বই লিখেছি। কোথাও দেখতে পাবেন না ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু বলেছি। রিমান্ড দেবেন বা না দেবেন আপনার ইচ্ছা। অসুস্থ, হুইল চেয়ার ছাড়া আমি চলতে পারি না।
এরপর মোজাম্মেল বাবু কথা বলতে চাইলে আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে দুই হাত জোর করে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বলেন, আমার জয় বাংলা, জয় হিন্দ বক্তব্য ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত।
এরপর শ্যামল দত্তের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। তিনি আদালতকে বলেন, আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক। ৩৭ বছর সাংবাদিকতা করেছি। ৩৩ বছর একই হাউজে আছি। আমি কোনো দিন সরকারের সুবিধা নিইনি। কোনো প্লট নিইনি, টিভি নিইনি। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদক পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ঘটনার সময় আমি ঢাকাতে ছিলাম না। সরকারের নির্দেশনা আছে যাচাই-বাছাই না করে যেন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে আদালত তাদের প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post