ইমাম মেহেদীর সাথে সাক্ষাত করতে সৌদি আরব যাওয়ার সময় রাজধানী থেকে ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তাবলীগ জামাতের বেশে থাকা ১৭ জেএমবি সদস্যকে রাজধানীর কাকরাইল থেকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পুলিশ বলছে, সৌদি আরব যাওয়ার উদ্দেশ্যে একমাস আগে কথিত হিজরতের নামে বাড়ি ছাড়ে তারা।
করোনাকালেও থেমে নেই জঙ্গিদের তৎপরতা। অনলাইনে নিজেরা সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে তারা- এমন তথ্য থাকার কথা গেলো কয়েকদিন ধরে বলে আসছিলো কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সেই ধারাবাহিকতায় নজরদারি বাড়ায় তারা।
সোমবার (০৪ মে) সন্ধ্যায় কাকরাইল মসজিদের বিপরীত পাশে পাবলিক হেলথ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের এডিসি তহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
[the_ad id=”652″]
গ্রেফতাররা হলেন- মো. হায়দার আলী (৪৪), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, মো. জামিরুল ইসলাম (২৪), মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো. শেখ আরাফাত ওরফে জনি (৪৮), মো. ইমরুল হাসান ওরফে ইমন (২৫), মো. সাইফুল ইসলাম (২৫), মো. মোজাম্মেল হক (৩৩), মো. শাহজালাল (৩৪), মো. আক্তারুজ্জামান (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির (২৩), মো. আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ (২২), মো. সোহাইল সরদার (৩৩), মো. ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০), মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ (১৮), মো. মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল ( ২৮) ও মো. সোহাগ হাসান (২০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ১৯টি মুঠোফোন ফোন, নগদ ২ লাখ ৩৪ হাজার বাংলাদেশি টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা নিজেদের জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন।
গ্রেফতাররা জানান, তারা পলাতক রবিউল সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় তারা পরস্পর যোগাযোগ করে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। তাবলিগ-জামায়াতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাবে। তাদেরকে বলা হয়েছিলো করোনার দুর্যোগে আকাশ থেকে এক ধরনের গজব নেমে আসবে এবং সমস্ত কিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে তখন সীমান্তে কোন পাহারা থাকবেনা এই সময় তারা যেন চলে আসেন।
এ বিশ্বাস নিয়ে গত ১৮ মার্চ তারা প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে যশোর সীমান্তের কাছে বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করেন ভারতে যাওয়ার জন্য। তাদেরকে আরও জানানো হয়েছিলো আগামী চল্লিশ দিন সূর্য উঠবে না, আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে, কাফিররা সবাই মারা যাবে, ইমানদারদের শুধু হালকা কাঁশি হবে, ঈমাম মাহাদির আগমন এই রমজানে সমাগত। তাই তারা যেভাবে পারে যেন আসার চেষ্টা করে। তারা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে পার হতে না পেরে ঢাকা হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক তারা ঢাকায় আসেন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে মানব উন্নয়নে আরও একধাপ এগুলো ওমান
এডিসি তোহিদ বলেন, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের প্ররোচনায় এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্র গত জানুয়ারি মাসে ওমরা পালনের উদ্দেশে গমন করে আর ফিরে আসেননি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সাদ, কাউসার, শরীফ, তোফাজ্জল, গিয়াসউদ্দিন, আলী আজম এবং রাশেদ নামে আরও সাতজন ঈমাম মাহাদির সৈনিক হিসেবে যোগদানের উদ্দেশে সৌদি আরব হিজরত করেছেন বলে গ্রেফতাররা জানান। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
এডিসি তহিদুল ইসলাম বলেন, জনৈক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে সৌদি আরবে যান এবং এখন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন বক্তব্য এবং গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে মুসলিমদের পক্ষে জিহাদ করার আহবান জানিয়ে অডিও ভিডিও প্রকাশ করেন। গ্রেফতাররা তাঁর বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ পূর্বক ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতি স্বরূপ সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।
https://www.youtube.com/watch?v=Pzlji2c8UcM
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post