ঘরের মাঠে জিততেই ভুলে গেছে পাকিস্তান। টানা ১০ টেস্টে জয়হীন (৬ হার, ৪ ড্র) তারা। ব্যর্থতার দায়ে বাবর আজমের কাঁধ থেকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়ে শান মাসুদকে দেয়া হলেও কোনো পরিবর্তন নেই। তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হেরে আসে পাকিস্তান। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজে। প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে পাকিস্তান। তাও যেনতেন হার নয়, নিজেদের ইতিহাসে ঘরের মাঠে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ হয়েছে পাকিস্তান।
অতীতে পাকিস্তানের মাটিতে তাদের হারানোর রেকর্ডই ছিল না বাংলাদেশের। সেরা সাফল্য বলতে ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১ উইকেটের হার। সেই পাকিস্তানকেই ঘরের মাঠে টানা দুই টেস্টে রীতিমতো গোহারা হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে দেশটির ক্রিকেট সমর্থক এবং সাবেক খেলোয়াড়ের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তান দল। যে কারণে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ।
রাওয়ালপিন্ডিতে ১০ উইকেটে প্রথম টেস্টে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৬ রানে বাংলাদেশের ৬ উইকেটের পতন ঘটিয়েছিল পাকিস্তান। অথচ সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই টেস্টও জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
এমন লজ্জাজনক হারের পর সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ বলেন, আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাদের সবার উদ্দেশ্য পাকিস্তান ক্রিকেটের ভালোর জন্য কাজ করা।
পাকিস্তানের এই দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অভাব দেখছেন অধিনায়ক। অধিনায়কত্ব পাওয়া শান খেলেছেন ৩৫টি টেস্ট। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলতে আর আছেন বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন আফ্রিদি এবং সরফরাজ আহমেদ। সরফরাজ আবার দুই টেস্টের কোনটিরই একাদশে ছিলেন না। আফ্রিদি খেলেননি দ্বিতীয় টেস্টে। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলে থাকা মুশফিক সাকিবের পাশাপাশি লিটন-মিরাজদেরও উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন তিনি।
শান এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের দুজন ক্রিকেটার আছে যারা ৭০-৯০টি টেস্ট খেলেছে (মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান)। এ ছাড়া লিটন ও মেহেদী (মিরাজ) ৪০টির বেশি টেস্ট খেলেছে। আমাদেরও লাল বলের ক্রিকেটে এমন অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। টেস্ট ম্যাচ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্করণ। এখানে অভিজ্ঞতা লাগবেই। আমাদের আরও টেস্ট ও লাল বলের ক্রিকেট দরকার। আপনি টি-টোয়েন্টি খেলে টেস্টের খেলোয়াড় তৈরি করতে পারবেন না।
বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের পর শান মাসুদের অধিনায়কত্ব করার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ব্যাটার হিসেবে বাংলাদেশ সিরিজে ব্যর্থ তিনিও। ৩৫ টেস্ট খেলে ফেললেও পারফরম্যান্স খুব একটা আহামরি নয়। গড় মাত্র- ২৮.৫৩। দলে যার জায়গা পাওয়া নিয়েই প্রশ্ন আছে, তার অধিনায়কত্ব পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকাই স্বাভাবিক। তবে অধিনায়কত্ব নিয়ে চিন্তিত নন মাসুদ।
তিনি এ ব্যাপারে বলেন, দায়িত্ব হারানো নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। পরিবর্তন আনার জন্য দায়িত্ব নিয়েছি আমরা বিশ্বাস করেছি এই পরিবর্তন দলের কাজে আসবে। আমার লক্ষ্য হলো যদি বিশ্বাস করি দল কোনো একটি সুনির্দিষ্ট একটা দিকে এগোতে পারে সেখানে নিজে ব্যর্থ হলেও আমি খুশি হব দলের জন্য। যতটা সময় আমি পাব, কৃতজ্ঞ থাকব ও সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করব।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post