বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রুরা তাদের ২০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। এই দাবিগুলোর মধ্যে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, কর্মপরিবেশের উন্নতি, সুবিধা বৃদ্ধি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। গতকাল রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকে বাংলাদেশ বিমান কেবিন ক্রু ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তারা অনশন করেন। দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতির হুমকি দেন ক্রুরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের বোসরা ইসলাম জানিয়েছেন, ক্রুরা বিমানের কাস্টমার সার্ভিস পরিচালক হায়াত-উদ-দৌলা খানের রুমে গিয়ে তাদের দাবি জানিয়েছেন। এমনকি তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথাও বলেছেন।
কেবিন ক্রুদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফ্লাইট সার্ভিসে সব চুক্তিভিত্তিক কেবিন ক্রুদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা ও পেনশন সুবিধার আওতায় আনা, কোভিডকালীন ক্রুদের যেসব বেতন ও ভাতা কাটা হয়েছিল তা পুনর্বহাল, নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত ৪৬ এ ও বি ব্যাচের কেবিন ক্রুদের বেতন/ভাতারর বৈষম্য দূর এবং সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
এছাড়াও ক্রুদের বর্তমান অ্যালাউন্স তিন মাস পর পর রিভিউর প্রশাসনিক আদেশ বাতিল করে ১০০% ভাতা ডলারে প্রদানের জন্য নতুন প্রশাসনিক আদেশ জারি, যাত্রীদের সেফটি এবং সার্ভিস সুষ্ঠুভাবে প্রদানের জন্য ক্রুদের নিরবচ্ছিন্ন ও পরিপূর্ণ রেস্ট নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের স্বনামধন্য এয়ারলাইন্সগুলোর মতো সব ক্রুদের জন্য সিঙ্গেল রুম নিশ্চিত, নারী কেবিন ক্রুদের ৩ বছর পর্যন্ত বিবাহ না করার এই বৈষম্য দূর করা, ফ্লাইট সার্ভিস ডিপার্টমেন্টকে ঢেলে সাজাতে সাজানো, শিডিউলার থেকে শুরু করে ম্যানেজার, ডিজিএম পর্যন্ত সব স্থানে যোগ্য লোককে বসানো ও জনবল বৃদ্ধি করার দাবি তাদের।
ক্রুরা আরও জানায়, ফ্লাইট ডিউটি শেষ করার পর ডিউটি টাইমের মধ্যেই ড্রপের গাড়ি নিশ্চিত করা, ক্রুদের মাসিক অফ-ডে ও বার্ষিক প্রাপ্য সব ছুটি প্রাপ্তির ব্যবস্থা, সব বৈদেশিক স্টেশন থেকে অ্যালাউন্স উত্তোলনের ব্যবস্থা, ব্রিফিং রুমে বিশ্রামের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, কেবিন ক্রুদের ইউনিফর্ম, স্যুটকেস, হ্যান্ডব্যাগ ইত্যাদি ইউনিফর্ম দ্রব্যাদি বিমান থেকে সঠিক সময়ে প্রাপ্তি সহজিকরণ, দাম্মাম, কুয়েত স্টেশনে স্লিপের ব্যবস্থা, কেবিন ক্রুদের হোটেল নির্বাচনের সময় কেবিন ক্রুদের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফিরোজ মিয়া আবীর এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আক্তার (লোটাস) গত ৮ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক এমডি ও সিইওকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এমডিকে ওএসডি করার পর, ইউনিয়ন পরিচালক (কাস্টমার সার্ভিস)-কে তাদের দাবিগুলো জানিয়েছে।
এদিকে বিমান বলছে, বিমান সংস্থাগুলোতে কেবিন ক্রুদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে চুক্তি নবায়ন করা হয়।
তবে, অনেক কেবিন ক্রুই চাকরি স্থায়ী করার জন্য আগ্রহী হলেও, বিভিন্ন কারণে এটি সবসময় সম্ভব হয় না। কারণ স্থায়ী করলে তারা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করবে। বিশ্বের কোনো এয়ারলাইন্সে এতো বয়স্ক কেবিন ক্রুকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post