বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আরও সহজ করতে পারতেন এবং অনেক সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর এই কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বারা শুরু করা প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম সরকার পরিবর্তনের পর স্থবির হয়ে পড়েছে। এর ফলে প্রবাসীরা এনআইডি আবেদন করতে এবং কার্ড সংগ্রহ করতে পারছেন না।
এর আগে, সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্মার্টকার্ড বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় প্রবাসীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রযুক্তিগত বা লজিস্টিক সমস্যা এই বিলম্বের কারণ হতে পারে। স্মার্টকার্ড বিতরণের এই বিলম্বের ফলে প্রবাসীরা বিভিন্ন সেবা গ্রহণে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের প্রবাসীদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোটার হিসেবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারছেন। এই দেশগুলোতে ইতোমধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রবাসীরা আর দেশে এসে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে না। ঘরে বসেই তারা ভোটার পরিচয়পত্র পাবেন।
এই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ ও কানাডাতেও এই সেবা চালু হবে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, সরকারের পটপরিবর্তনের জেরে দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবনেও নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। দূতাবাসগুলোতে চলছে অস্থিরতা, অনেক কূটনৈতিককে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির সরাসরি প্রভাব পড়ছে প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রমের উপর।
প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে দূতাবাসের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দূতাবাসগুলোতে কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তন এবং সহিংসতার আশঙ্কা কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে। ফলে, এনআইডি আবেদনগুলোর তদন্ত কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ কার্যক্রমে আবেদন পড়েছে ২২ হাজারের মতো। এর মধ্যে তদন্ত শেষে অনুমোদিত আবেদন পাঁচ হাজারের মতো। এদের বিরাট অংশের তদন্ত এখনও সম্পন্ন হয়নি।
এদিকে, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পূর্ববর্তী কমিশনের দ্বারা গৃহীত আবেদনগুলোকে বাতিল করে নতুন করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে কমিশনের কাজে নতুনত্ব এসেছে, তবে অনেকের মতে এটি একটি পদক্ষেপ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post