নিজের শিকড় ছিঁড়ে কাজের জন্য একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন শহরে চলে যাওয়া সবসময় সহজ হয় না। সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৪ মারসার কস্ট অফ লিভিং জরিপে হংকং আবারও প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ওপরে জায়গা করে নিয়েছে ।এশিয়ান শহরটি ২০২২ এবং ২০২৩ সালেও বার্ষিক তালিকার শীর্ষে ছিল, তার ঠিক পরেই ছিল সিঙ্গাপুর। বাকি শীর্ষ ১০ -এর বেশিরভাগই সুইস শহর – যেমন জুরিখ, জেনেভা, বাসেল এবং বার্ন যথাক্রমে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
বাড়ছে আবাসন খরচ, পরিবহণ, খাদ্য, পোশাক, গৃহস্থালী সামগ্রী এবং বিনোদন সহ প্রতিটি স্থানে ২০০ টিরও বেশি বিষয়ে খরচের ভিত্তিতে ২২৬ টি শহর পরীক্ষা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবথেকে দামি শহর নিউইয়র্ক সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। যেখানে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন, গত বছর ১৭ তম স্থান থেকে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। বাহামার নাসাউ নবম স্থান অধিকার করেছে, লস এঞ্জেলেস শীর্ষ ১০ এ রয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যয়বহুল আবাসন বাজার এবং পরিবহন, পণ্য ও পরিষেবার জন্য খরচ বৃদ্ধির কারণে শহরগুলিতে বসবাসের খরচ বিশেষভাবে বেড়েছে। বাসস্থানের খরচ বাড়ার জেরে প্রবাসী কর্মচারীরা অন্য খরচের তুলনায় তাদের আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভাড়া বা বন্ধকীতে ব্যয় করে। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে এই খরচ ভীষণভাবে অস্থিতিশীল ছিল, কারণ বাড়ি ভাড়ার দাম শহরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়। উপরন্তু, মুদ্রাস্ফীতি এবং বিনিময় হারের ওঠানামা আন্তর্জাতিক কর্মীদের বেতন এবং সঞ্চয়কে সরাসরি প্রভাবিত করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে জরিপে। তালিকায় ৯২ স্থানে থেকে টরন্টো আন্তর্জাতিক কর্মীদের জন্য কানাডার সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হিসাবে স্থান পেয়েছে, তারপরে ভ্যাঙ্কুভার ১০১ নম্বরে রয়েছে।
আর্থিক প্রভাব তালিকায় বেশ কিছু ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে।
তাদের মধ্যে মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটি এবং মন্টেরে উল্লেখযোগ্য। আগেরটি ৪৬ ধাপ উপরে উঠে ৩৩ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এবং পরবর্তীটি ৪০ধাপ উপরে উঠে ১১৫ তে পৌঁছেছে।সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের খরচ ২০২৪ সালের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা ছিল, যেখানে সাতটি মার্কিন শহর তালিকায় শীর্ষ ২০-তে উপস্থিত রয়েছে । মার্সার ইউএস -এর উপদেষ্টা ভিন্স কর্ডোভা বলছেন- ‘ইউএস-ভিত্তিক কোম্পানিগুলি বিশ্বব্যাপী প্রতিভার সন্ধান করে থাকে।
মুদ্রাস্ফীতিজনিত চাপ কিছু অভ্যন্তরীণ বিদেশী নাগরিককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু উচ্চ-খরচের শহর এবং মেট্রো এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করতে সমস্যায় ফেলতে পারে। অতএব, নিয়োগকর্তাদের জীবনযাত্রার খরচ এবং নেট বেতনের তথ্য সম্ভাব্য কর্মীদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত। যাতে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় আর্থিক প্রভাবগুলি আরও ভালভাবে বুঝতে পারে। ‘জীবনযাত্রার খরচের জন্য সবচেয়ে কম র্যঙ্কিং পেয়েছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ এবং নাইজেরিয়ার লাগোস ও আবুজা শহর । এর পেছনে এটি আংশিকভাবে “মুদ্রার অবমূল্যায়ন” কাজ করেছে । মার্কারের গ্লোবাল মোবিলিটি লিডার ইভন ট্র্যাবার একটি বিবৃতিতে বলেছেন-‘জীবনযাত্রার ব্যয়ের চ্যালেঞ্জগুলি বহুজাতিক সংস্থা এবং তাদের কর্মীদের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। আর তাই জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতির হার সম্পর্কে অবগত থাকা সংস্থাগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরভাবে তাদের প্রভাবগুলি পরিচালনা করতে এই বিষয়ে কর্মীদের কাছ থেকে ইনপুট চাওয়া উচিত ‘।
২০২৪ সালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকা দেখে নিন একনজরে
১. হংকং
২. সিঙ্গাপুর
৩. জুরিখ, সুইজারল্যান্ড
৪. জেনেভা, সুইজারল্যান্ড
৫. বাসেল, সুইজারল্যান্ড
৬. বার্ন, সুইজারল্যান্ড
৭. নিউ ইয়র্ক
৮. লন্ডন, যুক্তরাজ্য
৯. নাসাউ, বাহামা
১০. লস এঞ্জেলেস
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post