ভারতের অভ্যন্তরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক সদস্যকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমান্ত ইউনিয়নের তারকাঁটার আশপাশে স্থানীয়দের না যাওয়ার জন্য মাইকিং করেছে বিজিবি।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে উপজেলার মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধীনস্থ উথলী বিশেষ ক্যাম্পের পক্ষ থেকে সীমান্ত ইউনিয়নে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হয়।
এছাড়া দর্শনা নিমতলা আকন্দবাড়ীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাতেও মাইকিংসহ মসজিদের মাইকে সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলোতে সর্তকতা জারি করে মাইকিং করা হয়েছে।
মাইকিংয়ে বলা হয়, ‘বিএফএফ সদস্যরা সীমান্তের নিকটবর্তী বাংলাদেশি অসামরিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে পারে। বাংলাদেশি জনসাধারণকে সীমান্ত এলাকায় না যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। অনুরোধক্রমে উথলী বিশেষ ক্যাম্প।’
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম মিল্টন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত সোমবার রাতের যেকোনো সময় ভারত সীমান্তের মধ্যে বিএসএফের এক সদস্যকে কুপিয়ে জখম করে দুষ্কৃতকারীরা। তাদের দাবি- এরা বাংলাদেশি। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৫৮ বিজিবির সিইও ছিলেন।
পরে আমাকে জানানো হয়- গ্রামপুলিশ, প্রতিটা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে জানিয়ে দেন যেন সীমান্তবর্তী তারকাঁটার আশপাশে গরু-ছাগল কিংবা কৃষি কাজের জন্য কেউ না যায়। এরপর বিষয়টি মাইকিং করে সর্বসাধারণকে জানানোর জন্য বলা হয়।
বিজিবি জানায়, সোমবার রাতে মহেশপুর সীমান্তের ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। বিএসএফের দাবি- হামলাকারী দুষ্কৃতকারীরা বাংলাদেশি।
তবে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ আছে কি না বিজিবি জানতে চাইলে বিএসএফ তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হয়।
পতাকা বৈঠকে হামলার ঘটনায় ভারতীয় তিনজন নাগরিকের সরাসরি যুক্ত থাকা এবং বিএসএফ কর্তৃক একজন হামলাকারীকে আটকের পরিচয়সহ বিজিবির জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে বিএসএফ সম্মত হয় যে, হামলার ঘটনায় ভারতীয়রাই জড়িত। এতে বাংলাদেশি কাউকে জড়িত পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, মহেশপুর সীমান্তের ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে শুনেছি।
বিএফএস সদস্যরা আক্রমণ করতে পারে বলে জীবননগর থানাধীন সীমান্ত ইউনিয়নে বিজিবির পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়েছে।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক বলেন, বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারীরা বিএসএফ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়।
পরবর্তীতে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের অভিযোগের প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে তারা তা জানাতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য আসামির পরিচয় উপস্থাপন করলে বিএসএফ তাকে ভারতীয় নাগরিক বলে মেনে নেয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকের জড়িত থাকার উপযুক্ত প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিএসএফকে জানানো হয়েছে। এছাড়া মাইকিংয়ের বিষয়টি আমাদের রুটিন কার্যক্রমের অংশ। এটার সঙ্গে পতাকা বৈঠকের সম্পর্ক নেই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post