মাত্র ৩২ রিংগিত সার্ভিস চার্জে মালয়েশিয়া প্রবাসী ও সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট আবেদন, ট্রাভেল পাস, ফরেইনার ভিসা সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। দূতাবাসের ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত সেবা দিচ্ছে।
সেবা চালুর পর ৫ হাজারের বেশি ই-পাসপোর্ট আবেদন করেছেন, মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর এ আবেদন জমা পড়েছে, বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লিমিটেড’এ। তবে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্টের আবেদনগুলো গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ই-পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ। এর আগে ১৮ এপ্রিল ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল-মাসুদ চৌধুরী।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজধানী কুয়ালালামপুরের সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানামুখী সেবা নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য সেবাদানে হয়রানি ও দালালমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়ে আসছে।
এক্সপ্যাট সার্ভিসের পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, কল সেন্টার দিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সার্ভিস এবং পাসপোর্ট নেই এমন প্রবাসীদের জন্য ট্রাভেল পারমিট প্রদান, যা আগে সরাসরি হাইকমিশন থেকে সংগ্রহ করতে হতো প্রবাসীদের। এখন এ সেবা দিতে মাত্র ৩২ রিংগিত সার্ভিস চার্জ লাগছে।
গিয়াস উদ্দিন জানান, ২৫ এপ্রিল থেকে ৭ জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৬৮ জন প্রবাসী ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছেন এবং ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করেছেন ২ হাজার ৫৮৫ জন।
ই-পাসপোর্ট এবং ট্রাভেল পারমিটসহ মোট ৫ হাজার ৮৫৩ জন প্রবাসীকে এক্সপ্যাট সার্ভিস থেকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৪১২ জন বিদেশি নাগরিককে ভিসা সেবা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট সেবা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং পরিচালক অভিনেতা এসএম আরমান পারভেজ বলেন, এক্সপ্যাট সার্ভিস প্রবাসীদের জন্য জালান চান সো লিনে (সিটি সেন্টারের পাশে) প্রায় ১৪ হাজার বর্গফুট প্রশস্ত ওয়ান স্টপ সার্ভিসে, যেখানে একইসঙ্গে সব সেবা যুক্ত রয়েছে।
৪৫টি কাউন্টারের মাধ্যমে চলছে এ সেবা। কোনো প্রবাসী পাসপোর্ট করতে চাইলে ব্যাংক ড্রাফট থেকে শুরু করে ফর্ম পূরণ পর্যন্ত সব কাজে সহযোগিতা করবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।
সেবা গ্রহণকারী প্রবাসীদের প্রয়োজন হলে +৬০৩৯২১২০২৬৭ নম্বরে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং এক্সপ্যাট সার্ভিস দ্রুততম প্রবাসীদের আন্তরিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে বলে জানান আরমান পারভেজ।
এছাড়া, আউটসোর্সিং কোম্পানি ইসিএল রাজধানী কুয়ালালামপুরের বাইরে একাধিক রাজ্যে, যেমন জহরবারু ও পেনাংয়ে হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে মোবাইল টিমের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছে।
ইসিএল পরিচালিত ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস সেন্টারটির সার্বিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষভাবে ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় সরাসরি হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এবং সিসিটিভির মাধ্যমে তা হাইকমিশন থেকে সরাসরি মনিটরিং করা হচ্ছে।
সোমবার ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লিমিটেড’এ সেবা নিতে আসা কয়েকজন প্রবাসী জানান, উন্নত দেশের আদলে এ ধরনের ব্যবস্থা প্রবাসে সেবা সহজতর ও দ্রুততর করবে এবং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
ই-পাসপোর্টের সরকারি ফি: ভিসা ক্যাটাগরি (সাধারণ শ্রমিক) ৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদির জন্য ১৬৪ রিঙ্গিত (ইএসকেএল সার্ভিস চার্জ বাবদ ৩২ রিঙ্গিত)। ভিসা ক্যাটাগরি (অন্যান্য) ৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদির জন্য ৫৪৫ রিঙ্গিত (ইএসকেএল সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬০ রিঙ্গিত)।
ই-পাসপোর্ট আবেদন দাখিলের জন্য আবেদনকারীকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়োগকৃত আউটসোর্সিং কোম্পানি ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসের কুয়ালালামপুর এসডিএনবিএইচডি’ (ইএসকেএল)-এর মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া বাধ্যতামূলক।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post