দুবাইয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও বাসা-বাড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচার করতো একটি চক্র। সেখানে এসব নারীদের অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করা হতো। এদের মূলহোতা ইতি বেগম (৩৬) এবং তার প্রধান সহযোগী ওমর ফারদিন খন্দকার ওরফে আকাশকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩। গ্রেপ্তার দুজন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইতি বেগম ও তার প্রধান সহযোগী ওমর ফারদিন খন্দকার ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ মে) রাত ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন বন্দর-বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ধৃত আসামিদের জনশক্তি রপ্তানীর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। ধৃত আসামিরা সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের যুবতী ও কিশোরী নারীদেরকে দুবাইয়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও বাসা-বাড়িতে উচ্চ বেতনে চাকুরী, থাকা খাওয়া ফ্রীসহ লোভনীয় সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ফাঁদে ফেলে থাকে। দেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ নারীরা বিনামূল্যে দুবাই গিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বচ্ছল হওয়ার আশায় দুবাইতে যেতে রাজি হলে তাদেরকে চক্রটির মূলহোতা ইতি বেগমের দুবাই প্রবাসী বোন শিউলী বেগমের নিকট পাঠানো হয়।
শিউলী বেগম মূলত দুবাইয়ে পাচারকৃত নারীদের এয়ারপোর্ট হতে রিসিভ করে তার কাছে নিয়ে যায় এবং অন্য সহযোগীদের নিয়ে পাচারকৃত নারীদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অসামাজিক কাজে বাধ্য করে। অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে অস্বীকার করলে ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং দেশে অবস্থানরত পাচারকৃত নারীর পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখায়।
গত ৮ মার্চ চক্রটি বন্দর থানাধীন ঝাউতলা এলাকার দরিদ্র পরিবারের একজন নারীকে রেস্টুরেন্টে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে দুবাইতে পাচার করে। সেখানে পৌছে কথা অনুযায়ী কাজ না পেয়ে এবং নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়ে ওই ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। একই কায়দায় দুবাইতে পাচারকৃত একাধিক নারীকে নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও ভুক্তভোগী তার পরিবারকে জানায়।
এ প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৩১ মে) বন্দর থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত নারী পাচারকারী চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। এসব অপরাধী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আটক এসব আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান শামীম হোসেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post