ইসলামে জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে, যা আরবি শব্দ। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা। এ দিনে যে আমলে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়, তা জেনে নেয়া যাক।
পবিত্র কোরআনে সুরা জুমা নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। তাফসিরবিদরা বলেন, সুরা জুমার আগেরটির নাম সুরা ‘সফ’, যার অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা তৈরি হয়, এ ইঙ্গিত রয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিন নামাজের জন্য আহবান করা হবে, তখন তোমরা দ্রুত আল্লাহর স্মরণের জন্য উপস্থিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝতে পার। (সুরা জুমা, আয়াত :০৯)
মহান আল্লাহ তার প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) স্বয়ং এবং আমার ফেরেশতারা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ ও সালাম প্রেরণ করে থাকি। হে মুমিনরা! তোমরাও তার ওপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নে উল্লেখিত দরুদ শরিফ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয় এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়।’ (আফদালুস সালাওয়াত: ২৬)
দরুদটি হলো— اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيْمَا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলিমা।
এছাড়াও জুমার দিনে যে কোনো দরুদ পাঠে রয়েছে অনন্য ফজিলত। জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠের কথা হাদিস শরিফে এসেছে। হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ কর, কেননা তোমাদের পাঠ করা দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সবচেয়ে আমার নিকটতম হবে।’ (আবু দাউদ ১০৪৭)
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ কর। কারণ, জিবরাইল (আ.) এইমাত্র মহান আল্লাহর বাণী নিয়ে হাজির হলেন। মহান আল্লাহ বলেন, পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি। আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তিগফার করে। (তারগিব ৩/২৯৯)
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post