একসময় আরব বেদুইন যোদ্ধাদের তরবারির মুখোমুখি হওয়াটাই ছিল যেন খোদ আজরাইলের সাক্ষাৎ। আধুনিক এ যুগে এসে সামরিক দক্ষতা ও শৌর্য-বীর্যের পুরোটাই হারিয়েছে আরব দেশগুলো।
যে কোনো সংঘাতে তাদের ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কতটা অকর্মণ্য ও কাপুরুষ দিয়ে ভর্তি আরবের সামরিক বাহিনীগুলো।
যদিও বিশ্বের বুকে পশ্চিমা আধুনিক অনেক মরণাস্ত্রই রয়েছে তাদের ভাণ্ডারে। এত এত সুবিধা ও মরণাস্ত্র থাকার পরও আরব বাহিনীগুলো কেন অকার্যকর তারই বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মোকাবিলায় বেশ দক্ষতার পরিচয় দেয় আরব দেশ জর্ডান ও সৌদি আরবের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী।
যদিও সামরিক দক্ষতার জন্য খুব একটা প্রশংসা শোনা যায় না এসব দেশের। বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে বারবার ব্যর্থতা তাদের যুদ্ধের ময়দানে পুতুল বাহিনী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এ ছাড়াও ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধেও বড় ব্যর্থতার পরিচয় দেয় আরব বাহিনীগুলো।
সামরিক খাতে আরব দেশগুলোর এমন লজ্জাজনক ব্যর্থতার জন্য অর্থ কোনো সমস্যা নয়। প্রতি বছর ৬টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ এবং মিসর ও জর্ডান মিলে সামরিক ব্যয় বাবদ ১২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
যেখানে ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যরা ২০২৩ সালে সামরিক খাতে ৩৮০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ ছাড়াও মিসর ও জর্ডান প্রতি বছর ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পেয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, আরব দেশগুলো তাদের সামরিক বাজেটের বেশিরভাগই ব্যয় করে জঙ্গিবিমান ক্রয়ে। যদিও এসব দিয়ে প্রতিপক্ষের হামলা পুরোপুরি মোকাবিলা করা কখনোই সম্ভব নয়।
গেল এক দশকে অস্ত্র আমদানির ৫৪ শতাংশই জঙ্গিবিমানের পেছনে ব্যয় করেছে সৌদি আরব। অথচ সমুদ্র বাণিজ্যে সমৃদ্ধ আরব দেশগুলো তাদের নৌবাহিনীর প্রতি তেমন মনোযোগই দিচ্ছে না, বরং সেই দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে অঞ্চলটিতে মোতায়েন করা মার্কিন বাহিনীর বিভিন্ন নৌবহরের ওপর।
আবার অনেক রাষ্ট্র নৌবাহিনীতে বিনিয়োগ করলেও পর্যাপ্ত জনবল সংকটে ভুগেছে। জানা যায়, তেল সমৃদ্ধ দেশ কাতার তার নৌবাহিনীর জন্য ইতালি থেকে নতুন ৭টি জাহাজ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর এসব জাহাজ পরিচালনা প্রয়োজন হবে অন্তত ৬৬০ জন নাবিকের, যা বর্তমান কাতারি নৌবাহিনীর এক চতুর্থাংশ জনবলের সমান।
এ ছাড়াও আরবের সামরিক বাহিনীগুলো তাদের শাসকদের রক্ষীবাহিনী হিসেবে কাজ করে থাকে। সৌদি আরবের ১ লাখ ৩০ হাজার সদস্যের ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী দেশটির শাসক পরিবারের ব্যক্তিগত সুরক্ষা বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আর মিসরের সেনাবাহিনী দেশজুড়ে বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে বেশি তৎপর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post