উৎপাদিত বিমানের নিরাপত্তা ত্রুটি সংক্রান্ত একের পর এক কেলেঙ্কারিতে আক্রান্ত এভিয়েশন জায়ান্ট বোয়িংয়ের দুর্দশা যেন কাটছেই না। সর্বশেষ এই মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের রেটিং আউটলুককে ’স্টেবল’ থেকে ’নেগেটিভ’ এ নামিয়ে আনলো আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফিচের আগে গত সপ্তাহে বোয়িংয়ের রেটিংকে নামিয়ে এনেছিলো এস অ্যান্ড পি ও মুডিসের মতো ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলোও।
ফিচ জানিয়েছে, বোয়িং তার পূর্বের রেটিংয়ে ফিরতে পারবে যদি কোম্পানিটি ২০২৩ সালের আগে নির্মিত একশটিরও বেশি সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স এয়ারক্রাফট ও বর্তমানে হাতে থাকা সেভেন এইট সেভেন এয়ারক্রাফটগুলোর অর্ধেক আগামী ২০২৫ সালের আগে বিক্রি করতে সফল হয়। এর পাশাপাশি সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স এয়ারক্রাফটগুলোর উৎপাদনও বাড়িয়ে প্রতি মাসে অন্তত ৩৮টিতে উন্নীত করতে হবে তাদের।
সেভেন এইট সেভেন এয়ারক্রাফটে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোজন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে থাকা সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স এয়ারক্রাফটগুলোর দুর্ঘটনা পতিত হওয়ার পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে মার্কিন এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের তরফে নানা ধরনের আইনি ঝামেলার সম্মুখীন হচ্ছে বোয়িং।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে সেভেন এইট সেভেন এয়ারক্রাফটে নিম্ন মানের যন্ত্রাংশ সংযোজনের কারণে তৈরি হওয়া নিরাপত্তা ঝুঁকিকে।
এই ত্রুটি প্রমাণ হলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সার্ভিসে থাকা এগারোশটির বেশি ড্রিমলাইনারকে না ওড়ানোর মতো সিদ্ধান্তও আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফটের উৎপাদন অনেকটাই কমিয়ে এনেছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ।
এর আগে সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স এয়ারক্রাফটগুলো নিয়ে বিতর্কের ধাক্কা শেষ হতে না হতেই ড্রিমলাইনার সিরিজের স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে ত্রুটি নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেন বোয়িংয়ের এক সাবেক প্রকৌশলী। এ তথ্যে আলোড়ন তৈরি হয় পুরো বিশ্বের এভিয়েশন জগতে। কারণ বিশ্বের বর্তমান এভিয়েশন শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ’ওয়ার্কহর্স’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফটগুলোকে। এমনকি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সেও রয়েছে ছয়টি ড্রিমলাইনার।
একের পর এক এসব বিতর্ক ও কেলেঙ্কারির ধাক্কা পড়ছে বোয়িং কোম্পানির রাজস্বেও। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৩৪ কোটি ডলার লোকসান হয় বোয়িংয়ের। এই বিষয়গুলোই বোয়িংয়ের ক্রেডিট রেটিং হ্রাসের পেছনে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post