হযরত মুসা আ. এর আমলে দীর্ঘদিন যাবত বৃষ্টি বন্ধ ছিলো। অনাবৃষ্টিতে মানুষের জীবন ছিলো কষ্টের। গরমে হাঁসফাঁস ছিলো অসহনীয়। নবী আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। বৃষ্টি তো হলোই না, উলটো বেড়ে গেলো রোদ। কী ছিলো সেই ঐতিহাসিক ঘটনা।
গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে নবীর উম্মতরা তার কাছে এসে বললো হে নবী, আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন, এই বৃষ্টিহীন গরম আর সহ্য হয় না। হযরত মুসা আ. সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করতে শুরু করলেন।
দোয়া করার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা আরো বেড়ে গেলো। হযরত মুসা আ. অবাক হলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ, বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম, তুমি রোদের তেজ বাড়াইয়া দিলে।
আল্লাহর পক্ষ থেকে জবাব আসলো,
এই জমায়েতে এমন এক ব্যক্তি আছে, যে চল্লিশ বছর যাবত আমার নাফরমানি, আমার বিরোধিতা করছে, একটি দিনের জন্যও আমার বাধ্য হয়নি। তার কারণেই বৃষ্টি আসা বন্ধ আছে।
হযরত মুসা আ. জমায়েতের দিকে তাকিয়ে, সেই অচেনা, অজানা লোকটিকে বের হয়ে যেতে বললেন। সেই লোকটি ভাবলো, এখন যদি বের হয়ে যাই, তবে সবার সামনে পাপী হিসেবে লজ্জা পাবো। আর যদি থাকি, তবে বৃষ্টি আসা বন্ধ থাকবে।
নিজের ইজ্জত বাঁচানোর স্বার্থে সে আল্লাহর কাছে দোয়া করলো ‘আল্লাহ, চল্লিশ বছর আমার পাপ গোপন রেখেছেন, আজকে সবার সামনে বেইজ্জতি করবেন না। ক্ষমা চাচ্ছি।’
একদিকে দোয়া শেষ হলো, অন্যদিকে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলো। হযরত মুসা আ. আবারো অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ, কেউ তো জমায়েত থেকে বের হলো না, তবে বৃষ্টি দিয়ে দিলেন যে?
আল্লাহ জবাব দিলেন,
যার কারণে বৃষ্টি আসা বন্ধ ছিলো, তার কারণেই বৃষ্টি শুরু হলো। আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। চল্লিশ বছরের পাপ, দশ সেকেন্ডে ক্ষমা পেয়ে গেলো। আল্লাহর দয়া আর অনুগ্রহের কোনো সীমা পরিসীমা নেই।
হযরত মুসা আ. জিজ্ঞাসা করলেন, লোকটির নাম পরিচয় তো কিছুই জানালেন না। আল্লাহ বললেন, যখন পাপে ডুবে ছিলো, তখনই জানাই নাই, এখন তওবা করেছে, এখন জানাবো? পাপীদের পাপ আমি যথাসম্ভব গোপন রাখি, এটা আমার সাথে আমার বান্দার নিজস্ব ব্যাপার।
অথচ আমরা নিজেরা পাপী হয়েও প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে কারো না কারো নামে বদনাম গিবত করতেই থাকি। অন্যের দোষ বলে বেড়াতে থাকি। মানুষকে মানুষের সামনে অপমান করতে থাকি। অথচ আমরা আল্লাহর কত নাফরমানিতে লিপ্ত থাকি সর্বক্ষণ।
কীভাবে বলবো, হয়ত আমার গুনাহের কারণেই আল্লাহ তাআলা বৃষ্টি বন্ধ করে রেখেছেন। তাই চলুন সবাই মিলে আল্লাহর কাছে যার যার গুনাহের কারণে অনুতপ্ত হই। আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেটে দোয়া করি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post