সংসারে সুদিন আনতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধের হোটেলে রান্নার কাজে গিয়েছিলেন হুগলির গুপ্তিপাড়ার দুই ভাই। কিন্তু সেখানে তাঁরা আটকে পড়েছেন। মরুদেশে গিয়ে তাঁদের পরিস্থিতিতে আরও এক বার উঠে আসছে পরিযায়ী শ্রমিকের দুরবস্থার কাহিনি!
রাজেন ও রতন সরকার নামে ওই দুই ভাই জানান, হোটেলের সঙ্গে চুক্তি শেষ হলেও কাগজপত্র সংক্রান্ত কারণে তাঁরা ফিরতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, ওই সংস্থা কাগজপত্র তৈরি করে না দেওয়াতেই এই অবস্থা। তার উপরে সেখানকার ভারতীয় দূতাবাস থেকেও সাহায্য মিলছে না।
কোনও উপায় না দেখে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল করে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। ই-মেল পাঠিয়েছেন হুগলির জেলাশাসক দফতরেও। জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, বিষয়টি প্রশাসনের তরফে দেখা হবে।
জানা গিয়েছে, গুপ্তিপাড়ার সারদানগরের বছর একত্রিশের রাজেন এবং তাঁর ভাই, বছর আঠাশের রতন দু’বছর আগে রিয়াধে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হোয়াটসঅ্যাপ কলে তাঁরা জানান, ওই দেশে থাকার মেয়াদ ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। কিন্তু সংস্থার তরফে তা বাড়ানো হয়নি।
দেড় মাস আগে সংস্থার সঙ্গে তাঁদের চুক্তি শেষ হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, সংস্থা দু’মাসের বেতন দেয়নি। প্রথমে আশ্বাস দিলেও তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি। রাজেন বলেন, ‘‘সংস্থা কোনও দায় নিচ্ছে না। দেড় মাস আগে ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে দরখাস্ত জমা দিয়েছি।
তারাও কিছু করছে না।’’ দুই ভাই জানান, তাঁদের হাতে যা টাকাপয়সা ছিল, তা শেষ। এক বন্ধুর কাছে ধার করে চলছে। তাও শেষের পথে। রাজেনের কথায়, ‘‘রোজার মাসে সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদের পাশে গিয়ে খাবার এনেছি। এখনও চেয়েচিন্তেই চলছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’’ রাজেন-রতনের মা শিশুবালা সরকার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ছেলেরা ভালয় ভালয় বাড়ি ফিরলে বাঁচি, আর কিছু চাই না।’’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post