ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানিয়েছে। এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব নেতারা।
ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন হামলায় গোটা বিশ্বই নড়েচড়ে বসেছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বনেতাদের কেউ ইসরায়েলের পক্ষে, কেউ ইরানের পক্ষে, আবার কেউ উভয় পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সবার ভাষ্যই একটি বিষয় রয়েছে। আর তা হলো—যুদ্ধের শঙ্কা।
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের চালানো সামরিক হামলার প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা শক্তিগুলো সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে। এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি বলে দিয়েছেন, ইসরায়েলের জন্য আমেরিকা ‘লৌহবর্মের’ মতো নিরাপত্তা দেবে। এরই মধ্যে ক্ষমতাধর সাত দেশীয় জোট জি–সেভেনের বিশেষ সভা ডাকা হয়েছে, যা আমেরিকার স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে।
একইভাবে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ এক বিবৃতিতে ইরানের এই হামলাকে ‘অন্যায্য ও অতি দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। একইসঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেছেন, ইরানের এই পদক্ষেপ অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করল।
ইসরায়েলের পিঠ বাঁচাতে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যাক্ত করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও। এ সম্পর্কিত বিবৃতিতে জার্মান চ্যান্সেলরের মতো তিনিও এই হামলার জন্য ইরানকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিতে চলমান উত্তেজনায় রসদ জোগাল ইরান। তাঁর ভাষ্যমতে, ইরান যে নিজের উঠোনেই গোলমাল চায়, তা তারা আরও একবার দেখিয়ে দিল।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ হামলার জন্য ইরানের নিন্দা করেছেন। তিনি এও বলেছেন যে, এই হামলার মধ্য দিয়ে ইরান বুঝিয়ে দিল, তারা অঞ্চলটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় না। এ ক্ষেত্রে নিজের প্রতিরক্ষার স্বার্থেই ইসরায়েলের প্রতিরোধ করার অধিকার আছে বলে মত ব্যক্ত করেছেন তিনি।
‘অপ্রত্যাশিত’ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও। এ সম্পর্কিত বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হওয়ার হুমকি তৈরি হয়েছে। বিবৃতির শেষে ইসরায়েলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করতে তিনিও ভোলেননি।
এ ক্ষেত্রে চীন তুলনামূলক নিরপেক্ষ অবস্থান ব্যক্ত করেছে। এ সম্পর্কিত বিবৃতিতে চীন উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে ‘সংঘাত অবশ্যই বন্ধ হতে হবে’ বলে উভয় পক্ষকে সতর্কও করেছে দেশটি।
এ বিষয়ে স্বাভাবিকভাবেই সবাই তাকিয়ে আরব দেশগুলোর প্রতিক্রিয়ার দিকে। এ বিষয়ক এক বিবৃতিতে সৌদি আরব কোনো পক্ষের দিকে না গিয়ে নিরাপদ অবস্থান বজায় রেখেছে। তারা এর মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে সব পক্ষকে সংযত ও শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা সব পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযমের’ পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তারা অনুরোধ করেছে উত্তেজনা প্রশমনে এগিয়ে আসার জন্য।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post