দীর্ঘ ৩ বছর ওমানের কর্ম জীবন শেষ করে ওমান থেকে বিদায় নিলেন রাষ্ট্রদূত মোঃ গোলাম সারোয়ার। তিনি ওমানে থাকাকালীন তার কর্মকাণ্ড নিয়ে কমিউনিটিতে বিগত রাষ্ট্রদূতের তুলনায় বেশি প্রশংসিত হয়েছেন।
কমিউনিটির কোনো কোনো সিনিয়র নেতা তার কিছু কর্মকাণ্ডে নাখোশ থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা করেননি। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে, ওমানে থাকাকালীন রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে কেউ দুর্নীতির অভিযোগ দিতে পারেননি। তবে কমিউনিটির বেশকিছু কাজে তার নিরাবতা থাকায় সমালোচনা করছেন কেউকেউ।
তিনি প্রতিশোধ পরায়ন ছিলেন না। কেউ তাকে নিয়ে সমালোচনা করলে তিনি রেগে যেতেন না। তিনি সবসময়ই খেটে খাওয়া অসহায় প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তা করতেন। কোনো প্রবাসী তাকে নিয়ে সমালোচনা করলেও তিনি সেই প্রবাসী শ্রমিকের উপর রাগ করতেন না। বরং কেনো তাকে নিয়ে সমালোচনা করছে ওই শ্রমিক, এটা খোঁজার চেষ্টা করতেন তিনি।
ওমান থেকে বিদায় নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রদূত ওমান প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে একটি বিদায়ী বার্তা দিয়েছেন। প্রবাস টাইমের পাঠকদের জন্য রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী বার্তা হুবহু তুলে ধরা হইলো;
“প্রিয় প্রবাসী ভাই-বোনেরা, আস-সালামু-আলাইকুম। বাংলাদেশ দূতাবাস মাস্কাটে রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন সমাপন করে আমি ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসাবে নতুন কর্মস্থল মালয়েশিয়ার কুয়ালামাপুরের উদ্দেশ্য রওনা হবো।
বিগত তিন বছরের অধিক ওমানে কর্মকালীন সময়ে আপনাদের অকৃপণ সহযোগিতা ও অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য আমি সকলের নিকট আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ওমানে দায়িত্ব পালন কালে সকল কাজ আমি বাংলাদেশের স্বার্থ, প্রবাসী বাংলাদেশীদের বৃহত্তর স্বার্থ এবং বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক করার চেষ্টা করেছি।
আরো পড়ুনঃ ওমানে ভালো বেতনে চাকরী খুজুন অনলাইনে
তদুপরি আমার কথা বা কাজে যদি কখনো কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। সবাইকে আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আপনাদের কোন প্রয়োজনে আমার সাথে যোগাযোগ করলে খুশী হব। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন মহান আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে এই প্রার্থনা রইলো।
মোঃ গোলাম সারোয়ার
রাষ্ট্রদূত
মাস্কাট, ওমান
আরো দেখুনঃ প্রবাসীদের ওমান ছাড়ার হিড়িক
রাষ্ট্রদূত ওমান থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। যে উদ্যোগ গুলোর প্রশংসা করছেন ওমানের সকল প্রবাসীরা। তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর মোড়াল স্থাপন ও বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করে যান।
এ ছাড়াও ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কোটি টাকার অধিক অর্থ অনুদান দিয়ে যান। যা করোনাকালীন এই দুঃসময়ে স্কুল গুলো টিকিয়ে রাখতে বেশ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দেশটির বিশিষ্ট প্রবাসীরা। উদ্বোধন কালে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ সুতরাং দূতাবাসে যারাই আসবে বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করবেন।
আরো পড়ুনঃ চ্যালেঞ্জের বোঝা মাথায় নিয়ে আজ ওমানে আসছেন নতুন রাষ্ট্রদূত
এ ছাড়াও তিনি বিদায়ের আগে ওমানের সাহাম স্কুলে প্রায় এক কোটি টাকার অধিক অর্থ অনুদান করেন এবং ওমানের জালানে অবস্থিত বাংলাদেশ স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কমিউনিটির পক্ষ থেকে তের হাজার ওমানি রিয়াল এর চেক হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় উনত্রিশ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ।
https://www.youtube.com/watch?v=WouSK-VB37U&t=4s
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post