নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন বিশ্বজুড়ে এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ইতোমধ্যে গোটা বিশ্বে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ আরোগ্য লাভ করেছেন। করোনা আতঙ্কে দমবন্ধ করা এই সময়ে এটা অত্যন্ত স্বস্তির একটা খবর। সুস্থতার সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী এই পথে রয়েছে ওমান। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অনেকটাই সার্থক। কারণ গত একমাসে দেশটিতে আক্রান্তের পরিমাণ কমছে। পাশাপাশি মৃত্যুর হার ধরে রেখেছে স্থিতি।
ওমানে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ৪৪৭ জন যার মধ্যে ৪৯৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ও ১১ জন এই ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেন। তবে দেশটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের পরিমাণ ও মৃত্যুর সংখ্যা গত দশদিন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় দেশটিতে করোনাভাইরাসের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমছে। একই সাথে স্বস্তির খবর হলো খুব দ্রুত দেশটি করোনা মোকাবেলায় অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে। দেশটির গত ১০ দিন করোনা পরিস্থিতির দিকে খেয়াল করলে আমরা দেখতে পারি যে, গত ২১ এপ্রিল দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রামিত রোগীর সংখ্যা ছিলো ১৫০৮ জন যা ৩০ এপ্রিল ৪৮০ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৪৮ জনে। এই ১০ দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে যাবার সংখ্যাও বেশি। গত ১২ এপ্রিল সুস্থ রোগীর সংখ্যা ছিলো ২৩৮ জন যা ৩০ এপ্রিল দাঁড়িয়েছে ৪৯৫ জনে। তবে সবচেয়ে স্বস্তি ও আশার খবর হলো এই ১০ দিনে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ৩ জন। যা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় অনেক কম।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন শিথিলে স্বস্তি ফিরেছে ওমানে
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন,“ওমানে প্রতিদিন দুইহাজার করোনা পরীক্ষা করা হয়। এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলায় অনেকাংশে এগিয়ে। আমরা আশা করি অতিদ্রুত আমাদের দেশ থেকে করোনাভাইরাস নামক মহামারি দূর হবে। আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করতে পারবো।”
ওমানে গত ১ মাসে করোনা পরিস্থিতি শুধুমাত্র মাস্কাট ও দক্ষিণ বাতিনাহ ছাড়া অন্য সকল অঞ্চলেই করোনা আক্রান্তের পরিমাণ খুবই কম। গত এক মাসের করোনা পরিস্থিতির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, গত একমাসে দক্ষিণ শারকিয়াতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১১৮ জন, উত্তর শারকিয়াতে মাত্র ৩২ জন, দাহিরিয়াতে ৪৪ জন, আল দাখিলিয়ায় ৮০, আল বুরাইমিতে ৪ জন উত্তর বাতিনায় ৭৩, মুসান্দামে ৩জন। শুধুমাত্র দক্ষিণ বাতিনায় ২৩৯ জন ও মাস্কাটে এক হাজার ৩৭৫ জন। এই পরিসংখ্যানে বুঝা যায় দেশিটি করোনা মোকাবেলায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকখানি এগিয়ে। তবে এই স্বস্তিতে ওমানের নাগরিকরা যেনো স্বাস্থ্যবিধি মানতে ভুল না করে সেদিকেও খেয়াল রাখছে দেশটির সরকার। তথ্য সূত্রঃ ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
আরও পড়ুনঃ ওমানে আরো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা উচিত: ওসিসিআই
ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় (এমওএইচ) দেশটিতে বসবাসরত সকল নাগরিককে এই ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে একটি বিচ্ছিন্ন ঘরে থাকতে এবং কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে দেশটিতে লকডাউন চলাকালীন কোনো নাগরিক প্রয়োজনীয় কাজ ব্যতীত ঘরের বাহিরে বের না হওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে। দেশটিতে বসবাসরত সকল নাগরিক এবং প্রবাসীদের পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং হাত দিয়ে মুখ, নাক, ও চোখ স্পর্শ না করা এবং কাশি ও হাঁচি দেওয়ার সময় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
https://www.youtube.com/watch?v=_2LZqIFmTp4
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post