ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আটক করেছে। জব্দকৃত স্বর্ণের মূল্য প্রায় আড়াই কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২২টি সোনার বিস্কুট এবং তিনটি সোনার পেস্ট (গলানো মণ্ড) জব্দ করেছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিএসএফ সদস্যরা।
পৃথক ঘটনায়, পাচারকারী সন্দেহে তিনজন ভারতীয় চোরাকারবারিকে আটক করেছে বিএসএফ। চোরাকারবারিরা এসব স্বর্ণ বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিল। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছে, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ১৪৫ বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা পৃথক ঘটনায় পেট্রাপোল স্থলবন্দর (আইসিপি) থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে, দুই কোটি ২৯ লাখ রুপির বেশি মূল্যের স্বর্ণ জব্দ করে।
প্রথম ধাপে ১৬ ফেব্রুয়ারি পেট্রাপোলে স্থানীয় সময় রাত ১২টা নাগাদ দুটি খালি ট্রাককে সন্দেহ হলে থামায় বিএসএফ সদস্যরা। অনুসন্ধান দল ট্রাকটি গুদামে নিয়ে তল্লাশি চালায়। একপর্যায়ে ট্রাকের কেবিনে লুকিয়ে রাখা ২২টি স্বর্ণের বিস্কুট জব্দ করে। এতে দুই ভারতীয়কে আটক করে বাহিনীর সদস্যরা।
তারা হলেন উত্তর ২৪ পরগনা বনগাঁর বাসিন্দা রাজু দাস ও দমদমের পাইকপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জিত দাস। জিজ্ঞাসাবাদে, দুজনেই নিজেদের পেশায় চালক হিসেবে পরিচয় দেন। প্রায় দুই বছর ধরে, ভারত বাংলাদেশে মধ্যে যাতায়াত করছেন তারা।
তারা জানান, ১৩ ফেব্রুয়ারি, কাপড় ভর্তি ট্রাক নিয়ে বেনাপোল স্থল বন্দরে পৌঁছান তারা। সেখানে মালামাল আনলোডের সময়, সেয়াজ ও উজ্জ্বল নামে দুই বাংলাদেশি তাকে স্বর্ণ দিয়ে বলে, এই স্বর্ণ ভারতে পাঠালে তাকে ১০ হাজার বাংলাদেশি টাকা দেওয়া হবে। সেয়াজ ও উজ্জ্বলের কাছ থেকে সেসব স্বর্ণ সংগ্রহ করে ট্রাকের কেবিনে তারা লুকিয়ে রাখেন। পেট্রাপোলে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে সেসব স্বর্ণ পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাদের। তবে ট্রাকগুলো পেট্রাপোলে প্রবেশের পর বিএসএফ এর হাতে ধরা পড়েন তারা।
একই দিনে (১৬ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় ঘটনায়, দুপুর ১২.১৫ মিনিট নাগাদ ইমিগ্রেশনের সময় এক ভারতীয় থেকে স্বর্ণ জব্দ করে বিএসএফ। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে অভিবাসনের সময় যাত্রীটির শরীরে নীচের অংশে কিছু ধাতব পদার্থের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে বাহিনীর এক সদস্য। যাত্রীটিকে তল্লাশির জন্য টয়লেটে নিয়ে যায়। এরপর যাত্রীটির মলদ্বার থেকে তিনটি স্বর্ণের দলা উদ্ধার করে।
আটক করা হয় তামিলনাড়ুর রামানাথপুরম এর বাসিন্দা মোহাম্মদ রিবায়েদিন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পেশায় তিনি হোটেলের শেফ। তিনি ঢাকা বিমানবন্দরে এক বাংলাদেশির কাছ থেকে এসব স্বর্ণ সংগ্রহ করেছিলেন। এসব স্বর্ণ চেন্নাইয়ের ইকবালের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। তাতে সফল হলে ১৫ হাজার বাংলাদেশি টাকা পেতেন। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের পরই শরীর থেকে স্বর্ণ জব্দ করে বিএসএফ।
বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (জনসংযোগ) একে আর্য জানিয়েছেন, চোরাকারবারিরা গরিব ও নিরীহ মানুষকে অল্প পরিমাণ টাকার প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ সজাগ আছে এবং কঠোর পদক্ষেপ অবলম্বন করছে। সীমান্তে যেকোনো ধরনের চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ সম্পূর্ণভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post