পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১৪টি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আদালত (এটিসি)। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) এটিসির বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ এক শুনানি শেষে এই রায় দেন। ইমরান খানের পাশাপাশি তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) জ্যেষ্ঠ নেতা শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ১৩ মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) ৯ মে দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট ১২টি মামলায় ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সদর দফতর এবং সেনা জাদুঘরে হামলা নিয়ে আরো দুই মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হয়েছে। ভোটের দুদিন পার হলেও এখনো সব আসনের ফল ঘোষণা করতে পারেনি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত ফলে নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দলের চেয়ে বেশ ভালো ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের অধিকাংশই ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে ফলাফলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। এই দুটি দলই জোট গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও পিএমএল (এন)-এর নেতা নওয়াজ শরিফ দুজনই নিজেদের বিজয়ী দাবি করে ভাষণ দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে দুজনই বিজয়ী ভাষণ দিয়েছেন। শুরুটা করেছেন অবশ্য নওয়াজ শরিফ। নির্বাচনে পিছিয়ে থেকেও নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন তিনি। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে তার দল। তবে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য তা যথেষ্ট নয় জানিয়ে জোট সরকার গঠনের কথা বলেছেন তিনি।
সফল নির্বাচনের জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির। আইএসপিআরের এক বিবৃতিতে জেনারেল মুনির তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং বিজয়ী সকল প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জনগণের তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগের জন্য অবাধ এবং বাধাহীন অংশগ্রহণ পাকিস্তানের সংবিধানে বর্ণিত গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শন করে। একই সঙ্গে অপ্রতিরোধ্য প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবিদার বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া জাতীয় গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, বেসামরিক প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত গঠনমূলক ভূমিকা নির্বাচন সফলে ভূমিকা রেখেছে। বিবৃতি আরও বলা হয়, নির্বাচন জয়-পরাজয়ের শূন্য-সমষ্টি নয় বরং জনগণের ম্যান্ডেট নির্ধারণের একটি মহড়া। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মীদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের শাসন ও সেবা করার প্রচেষ্টাকে একত্রিত করা উচিত, যা গণতন্ত্রকে কার্যকরী ও উদ্দেশ্যমূলক করার একমাত্র উপায় হতে পারে।
পাকিস্তানের জনগণ যেহেতু পাকিস্তানের সংবিধানের প্রতি তাদের সম্মিলিত আস্থা রেখেছে, এখন রাজনৈতিক পরিপক্বতা এবং ঐক্যের সঙ্গে এর প্রতিদান দেওয়া সব রাজনৈতিক দলের কর্তব্য।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post